ইদানীং খবরের কাগজ খুললে প্রায় রোজই দেখতে পাওয়া যায় যৌন হেনস্থা বা বধূ নির্যাতনের খবর। তবে এবার খাস কলকাতার বুকেই নিজের শ্বশুরবাড়িতে নারকীয় যৌন নির্যাতনের শিকার হলেন এক মহিলা।
ওই মহিলার বিয়ে হয়েছিল বালিগঞ্জ পার্কের এক অভিজাত ধনী ব্যবসায়ী পরিবারে। জানা গেছে, বিয়ের কিছুদিন পরেই তাঁকে বলা হয় পরিবারের প্রথা হচ্ছে ভাইদের মধ্যে স্ত্রী অদলবদল করা। অর্থাৎ এক ভাইয়ের স্ত্রীয়ের সঙ্গে অন্য ভাই যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হবে! অভিযোগ, পারিবারিক এই প্রথার নামে এভাবেই দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে বাড়িতেই ধর্ষিতা হয়েছেন ওই মহিলা।
তবে এখানেই শেষ হয়। মহিলার অভিযোগ, তাঁর নিজের স্বামীও তাঁকে বাধ্য করতেন বিকৃত যৌনতায় সঙ্গ দিতে। প্রতিবাদ করায় জোটে শারীরিক নির্যাতন। পাশাপাশি, পণের টাকার জন্য বাড়তে থাকে চাপ। কেড়ে নেওয়া হয় মহিলার বাপের বাড়ি থেকে আনা সমস্ত গয়নাও। দিনের পর দিন এই পাশবিক অত্যাচার আর সইতে না পেরেই শেষ পর্যন্ত পুলিসের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। অভিযোগ দায়ের করেন কড়েয়া থানায়।
অভিযোগে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, বিয়ের কয়েক মাস পরে একদিন তাঁর স্বামী সুরঞ্জন সেন জোর করে ভাসুর নীরঞ্জন সেনের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে। তাঁর স্বামী তাঁকে বোঝান এটা পারিবারিক প্রথা। কিন্তু এরপরও তিনি প্রতিবাদ জানালে স্বামীর সহযোগিতায় তাঁকে ধর্ষণ করে ভাসুর। অন্যদিকে, পাল্লা দিয়ে চলতে থাকে স্বামীর বিকৃত যৌনতা।
অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই বালিগঞ্জ পার্কের অভিজাত আবাসনের চারতলার ফ্ল্যাটে হানা দেয় পুলিশ। নির্যাতিতার স্বামী অভিযুক্ত সুরঞ্জন সেন ও ভাসুর নীলাঞ্জন সেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গেছে, দুজনেই শহরের প্রতিষ্ঠিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ডিসি (দক্ষিণ পূর্ব) ডিভিশন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘পুলিশ গেলে অভিযুক্তরা পুলিশকে বাধা দেয়। পুলিশকে মারধরও করে। ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশকে মারধরের একটি আলাদা মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
তবে অভিযোগকারী বউমার বিরুদ্ধে শ্বশুরের পাল্টা অভিযোগ, বউমার চরিত্রেই সমস্যা রয়েছে। বেশিরভাগ সময়েই নাকি রাতে বাড়ির বাইরে কাটান তিনি। অন্যান্য পুরুষদের সঙ্গে রাত কাটান। তা নিয়ে পরিবারে অশান্তি হত। তাই তাঁর সঙ্গে আর পরিবারের কোনও সদস্যই কথা বলতেন না। সাত মাস আগে তিনি শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করা হবেও বলে মনস্থির করেছিল সেন পরিবার।