নতুন বছরও বিতর্ক দিয়েই শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বছরের প্রথম দিনেই এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাকে নিশানা করে মোদী বলেন, ‘বাংলায় বিজেপিকে তার গণতান্ত্রিক অধিকার পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না। ওই রাজ্যে আদৌ গণতন্ত্র আছে বলে মনে হয় না।’ এমন মন্তব্যে কার্যত ক্ষুব্ধ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিলেন, ওঁর কাছ থেকে গণতন্ত্র শিখব না। ওঁরাই আসলে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এখানে গণতন্ত্র আছে, তাই বিজেপিও টিকে আছে।
মঙ্গলবার টিভি চ্যানেলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার পরই পার্থ নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, ‘এ রাজ্যে গণতন্ত্র রয়েছে বলেই তো বিজেপি এখানে রয়েছে। ওদের নেতাদের মুখে প্রতিদিন যে ভাবে কুকথার স্রোত বইছে, তাতে গণতন্ত্রের কথা ওদের মুখে মানায় না। উন্নয়ন, সম্প্রীতি আর শান্তির দিকে ওদের নজর নেই। ওরা ফের বাংলাকে অশান্ত করতে চাইছে। কিন্তু তৃণমূল তা হতে দেবে না।’
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের পরে মেদিনীপুরে সভা করতে এসেও এ রাজ্যের ‘নির্বাচনী-সন্ত্রাস’ নিয়ে এমনই ভ্রান্ত অভিযোগ তুলেছিলেন মোদী। খুনোখুনির জন্য কার্যত দায়ী করেছিলেন রাজ্যের শাসক দলকে। কিন্তু তখনও মোদীর বক্তব্যকে খণ্ডন করে তৃণমূল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় নিহতদের সিংহভাগই তাদের দলের। তাই বহিরাগতদের এ রাজ্যে এনে ‘সন্ত্রাস’ কারা করছে এবং কারা তার শিকার হচ্ছে, সেটা বাংলার মানুষের কাছে পরিষ্কার।
বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে পার্থ বলেন, ‘২০১৯ বিজেপি ফিনিশ হওয়ার বছর। তাই বিজেপির মনে ভয় ঢুকেছে। এবার যে আর সরকারে ফিরে আসতে পারবে না, তা ওরা স্পষ্ট বুঝতে পারছে। তাই এসব হুঙ্কার।’ তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘ওদের কাছে গণতন্ত্রের শিক্ষা নিতে হবে না। বিজেপির না আছে উন্নয়নের স্বপ্ন, না আছে কর্মসংস্থানের দিশা। তাই ৩ রাজ্যে ওদের মানুষ ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। সেখানে ওদের গণতন্ত্র থাকলে মানুষ ওদের ফেলে দিত না!’
এখানেই না থেমে পার্থ আরও বলেন, বিজেপি বলছে নোট বন্দির ফলে কোনও বিপর্যয় হয়নি। কিন্তু বিপর্যয় যে হয়েছে ৫ রাজ্যের নির্বাচনই তার প্রমাণ। ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর নােটবন্দীর দিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম প্রতিবাদ করেন। এমনকি জিএসটি চালু করার আগেও নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি সে কথা কানে নেয়নি। ফলে এবার তারা কানমলা খাবে।’ তাঁর বক্তব্য, ২০১৯-এ দিল্লী থেকে বিজেপিকে হঠিয়ে বাংলার মতোই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে গোটা দেশে।