মাস তিনেক আগে মহারাষ্ট্র থেকে একটি বিশেষ প্রজাতির মুরগী এনে চাষ শুরু করেছিলেন কাকদ্বীপের দুর্গানগরের বাসিন্দা জয়দেব মণ্ডল ও ফাল্গুনী মণ্ডল। সেখানে আদিবাসীরা এই মুরগীর চাষ করেন। শোনা যাচ্ছে এই মুরগীর মাংস ও ডিম ক্যানসার প্রতিরোধে সক্ষম। কে জানত এই মুরগীর খবর! কিন্তু তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা রাজ্যের খবর তাঁর নখদর্পনে। সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে নামখানায় এসে এই করকনাথ প্রজাতির মুরগি নিয়ে খোঁজখবরও নেন তিনি। প্রাণীসম্পদ দফতরের জেলা আধিকারিককে মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘জানেন এখানে কোথায় কড়কনাথ মুরগির চাষ হচ্ছে?’
আধিকারিক আমতা আমতা করতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘খোঁজ নিন। আমি শুনেছি এই কড়কনাথ মুরগি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট।’ এর প্রসার ঘটাতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে কাজে লাগানোরও পরামর্শ দিয়েছিলেন মমতা। আর মুখ্যমন্ত্রীর খোঁজ নেওয়ার পর থেকেই বাজারে হিট কড়কনাথ মুরগী।
জয়দেব জানান, ৫০টি কালো মুরগির ছানা এনে ফার্ম শুরু করেন তিনি। সাধারণ মুরগীর মতোই বৃদ্ধির হার এই মুরগীর। তবে মাংস কালচে রঙের। রান্নার পরেও এই রঙের খুব বেশি পরিবর্তন হয় না। মাংস কালচে রঙের হলেও মুরগীর ডিম সাধারণ দেশি মুরগীর ডিমের মতোই। তবে এই মুরগীর মাংস ও ডিম খেতে খুবই স্বাদু। সাধারণত ঘাসপাতা খেলেও প্রচুর পরিমাণে ডিম দেয় এই মুরগী।
সম্প্রতি ঠাকুরপুকুর ক্যানসার হাসপাতাল থেকে একটি প্রতিনিধি দল জয়দেববাবুর বাড়ির এই কড়কনাথ প্রজাতির মুরগী ফার্মে এসে দুটি মুরগী ও শতাধিক ডিম নিয়ে গিয়েছেন। কেজি প্রতি এই মুরগীর দাম হাজার টাকা ও পঞ্চাশ টাকা জোড়া দরে ডিমের দাম পেয়েছেন এই মণ্ডল পরিবার।
ভিন রাজ্যের এই মুরগির মাংস ও ডিম সম্পর্কে বিশিষ্ট প্রাণী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বরুণ রায় বলেন, ‘এই কড়কনাথ প্রজাতির মুরগীর মাংসে এক শতাংশের কম পরিমাণে ফ্যাট রয়েছে। তবে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি। প্রায় ২৪ থেকে ২৫ শতাংশ প্রোটিন থাকলেও একেবারেই কোলেস্টেরল নেই। ফলে সব দিক থেকে এই মুরগী মাংস সত্যি সত্যিই একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য। এর ডিমও একই ভাবে ভীষণ উপকারী।’