কেন্দ্রের নির্দেশ মতোই কাজ করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাই অগস্টা ওয়েস্টল্যান্ড সংস্থার ভিভিআইপি চপার দুর্নীতির মামলায় এবার ইডির ভূমিকার বিরুদ্ধে আদালতে কড়া সমালোচনা করল কংগ্রেস। দলের বর্ষীয়ান নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম রবিবার একের পর এক ট্যুইট করে কেন্দ্রীয় সরকার, ইডি এবং সংবাদমাধ্যমের ভূমিকার বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেছেন।
তিনি বলেন, মোদী সরকার, ইডি এবং সংবাদমাধ্যম নতুন যে উন্নত পদ্ধতিতে বিভিন্ন দুর্নীতির মামলার বিচার করছে, তা সালিশি সভাকেও হার মানায়। আর কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা ইডির নামকরণ করেছেন ‘এমব্যারাসিং ডিজাস্টার’। এই দুর্নীতি মামলায় মিডলম্যান ক্রিশ্চান মিশেলকে গ্রেফতার করে ভারতে আনার পরই কংগ্রেস আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিল যে মোদী সরকার তাঁকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করবে। অর্থাৎ, রাফাল দুর্নীতি নিয়ে সরব হওয়া কংগ্রেসের মোকাবিলায় মিশেলকে ব্যবহার করা হবে।
প্রসঙ্গত, শনিবার দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্টে ইডির তরফে দাবি করা হয়েছে জেরার সময় ক্রিশ্চান নাকি বলেছেন ‘মিসেস গান্ধী’ এবং ‘সন অব ইটালিয়ান লেডি’, ‘দ্যা নেক্সট প্রাইম মিনিস্টার অব দ্য কান্ট্রি’। কিন্তু কী সূত্রে মিশেল সোনিয়া গান্ধীর নাম করেছেন সেটা স্পষ্ট করে জানায়নি তারা। তবে এই কারণ দেখিয়ে ক্রিশ্চান মিশেলকে আরও বেশিদিন নিজেদের হেফাজতে রাখার আর্জি জানিয়েছে ইডি। অর্থাৎ, ঘুরিয়ে এই চপার কেলেঙ্কারি মামলায় সোনিয়া গান্ধী এবং কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর নাম সুকৌশলে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এমনকি মিশেলের আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, আইনজীবীর মাধ্যমে মিশেলকে প্রভাবিত করার জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে ইডির এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে দাবি করে ক্রিশ্চানের আইনজীবী অ্যালজো কে জোসেফ আদালতে জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল তাঁকে চিঠি লিখে আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল। কিন্তু ইডির আধিকারিকরা সেটা তাঁর কাছে পৌঁছনোর আগেই ছিনিয়ে নেন। যা একপ্রকার অনৈতিক।
এর বিরুদ্ধে রবিবার থেকেই আসরে নেমেছে কংগ্রেস। চিদম্বরম ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ‘ইডি যা বলবে, তা হবে মৌখিক প্রমাণ। ইডি যে কাগজের টুকরো জমা দেবে, তা সাক্ষ্য প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হবে। আর টিভি চ্যানেলে রায় ঘোষণা হবে। এসব দাবির ক্ষেত্রে ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোড এবং এভিডেন্স অ্যাক্ট প্রযোজ্য নয়। ক্যাঙ্গারু কোর্টের ক্ষেত্রে বিচার তাও আদালত কক্ষের মধ্যে হয়। কিন্তু, এই নতুন ধরনের বিচার পদ্ধতিতে মামলার রায় ঘোষণা হয় টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে।’
কংগ্রেসের চ্যালেঞ্জ, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসার পর তারা অগস্টা ওয়েস্টল্যান্ড মামলায় মোদী সরকারের হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্ত করবে। রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেছেন, ‘এখন হয়তো ইডি মোদী সরকারকে বাঁচিয়ে দেবে। কিন্তু, ২০১৯ সালে যখন এই সরকার ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হবে, তখন আমরা অগস্টা ওয়েস্টল্যান্ড দুর্নীতি মামলার সঙ্গে মোদী সরকারের যোগাযোগ নিয়ে পূর্ণ তদন্ত করব।’ মোদীকে তাঁর কটাক্ষ ‘এটা স্পষ্ট যে, চৌকিদার এখন দাগাদার হয়ে গিয়েছেন।’