দূষণমুক্ত ও গতিশীল বাংলা গড়তে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ইলেকট্রিক পরিবহণ ও জলপথ বিকাশের দিকে নজর দিচ্ছে রাজ্য। জানা গেছে, বিনিয়োগ আনতে এবার এই দুই ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরা হবে। আসন্ন বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে পরিবহণ দফতরের তরফে বিনিয়োগকারীদের কাছে সেই তথ্য তুলে ধরা হবে বলে জানা গেছে। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি নিউ টাউনে কনভেনশন সেন্টারে বসছে দু’দিনের এই সামিট।
পরিবহণ দফতর জানিয়েছে, রাজ্য সরকার এবার ইলেকট্রিক বাস পথে নামাচ্ছে। এ জন্য ইতিমধ্যেই সরকার চার্জিং স্টেশন তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে। এখানে সরকারি বাসের সঙ্গে বেসরকারি ইলেকট্রিক গাড়িও যাতে চার্জ দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থাও থাকবে। চাহিদা দেখে এই চার্জিং স্টেশন তৈরির সংখ্যা বাড়াতে বিশেষ অসুবিধা হবে না।
শহরে যে হারে দূষণ বাড়ছে, তাতে ইলেকট্রিক বাসই বিকল্প যান হিসেবে চিহ্নিত হবে। বেকার ছেলেমেয়েদেরও এই ব্যবসায় উদ্বুদ্ধ করা সম্ভব। কারণ নীতি আয়োগও রাজ্যগুলিকে ইলেকট্রিক বাস কেনার জন্য ৬০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে। রাজ্য সরকার এই শিল্প গড়তে বিনিয়োগকারীকে নানা ধরনের সহযোগিতা করতে চায়। এই ধরনের বিনিয়োগ নিয়ে উৎসাহদান প্রকল্প গ্রহণের প্রস্তাব নিয়ে অর্থ ও শিল্প দফতর ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে। এবারের সামিটে সেই বার্তাই নির্দিষ্ট করে পরিবহণ কর্তারা পৌঁছে দিতে চান।
পাশাপাশি রয়েছে জলপথ বিকাশ। ইতিমধ্যেই রূপনারায়ণ নদের ওপর কোলাঘাট-গেঁওখালি জলপথকে কেন্দ্রীয় সরকার প্রোটোকল রুটের মর্যাদা দিয়েছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই ও নির্মাণ সামগ্রী আমদানী-রপ্তানির জন্য কোলাঘাটে পৃথক জেটি তৈরি হয়েছে। কলকাতার সঙ্গে ত্রিপুরাকে নদীপথে জোড়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রক।
ইতিমধ্যেই সোনামুড়ায় গুমতি নদীর ওপর একটি জেটি তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি চালু হয়েছে নদীপথে পণ্য পরিবহণও। যার ফলে নদীপথ জুড়ে ক্রুজ বা পর্যটনের বিপুল সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। নদীপথে দেশের বিভিন্ন জায়গা নয় বালাদেশ ভ্রমন পর্যটকদের বাড়তি আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারে। এজন্য আর আইনি কোনও সমস্যা নেই। বিনিয়োগকারীদের যা উৎসাহ দিতে পারে।
বেসরকারি সাহায্যে ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ অথরিটি অফ ইন্ডিয়া সম্প্রতি কলকাতা বেনারস পণ্য পরিবহণ চালু করেছে। চালু হয়েছে রোরো পরিষেবা। যা যাত্রী বা পণ্য বোঝাই যানকে নদী পারাপার করে দিচ্ছে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই জলপথ পরিবহণকে নিরাপদ করতে বিভিন্ন জেটি সংস্কার ও ‘জলধারা’ প্রকল্পের আওতায় উন্নতমানের জলযান চালানোর কাজ শুরু করেছে। জানা গেছে, জলপথের পরিকাঠামো বিকাশে নেওয়া হয়েছে ৩০৬ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা।