সমঝোতাপত্র সইয়ের এক বছর পরেও হাত গুটিয়ে বসে কেন্দ্র। বাংলার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তারা। ফলে পোশাক রপ্তানিকে উৎসাহিত করতে রাজ্যে ‘উৎকর্ষ কেন্দ্র’ তৈরির কাজ এখনও শুরুই হল না।
গতবার ১৬ জানুয়ারি কলকাতায় বসেছিল বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট (বিজিবিএস)-এর আসর। প্রায় এক বছর হতে চলল। ইতিমধ্যে রাজ্যের তরফ থেকে ঘোষণা করাও হয়ে গেছে, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি হতে চলেছে এ বছরের সম্মেলন। তবে কেন্দ্রের হাত গুটিয়ে বসে থাকার ফলে এখনও থমকে আছে গতবারের নেওয়া একটি উদ্যোগ।
উল্লেখ্য, পোশাক রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে মেটিয়াবুরুজে প্রস্তাবিত নলেজ সেন্টার তৈরির জন্য গতবারের সম্মেলনে রাজ্যের ক্ষুদ্র, কুটির, মাঝারি ও বস্ত্র শিল্প দফতর একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করে কেন্দ্রের বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীরে অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের সঙ্গে। শর্ত ছিল, রাজ্যকে পরিকাঠামে দিতে হবে। কাউন্সিল জানিয়েছিল সেন্টার থেকে পোশাক নির্মাতাদের রপ্তানি বিষয়ক পরামর্শ ও অন্যান্য সহযোগিতা দেবে তারা।
বলা হয়েছিল, বিশ্ববাজারে ব্যবসার সুযোগ করে দিতে ব্যবসায়ী ও উৎপাদকদের পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করবে এই কেন্দ্র। থাকবে ল্যাবরেটরি। যার কাজই হবে রপ্তানিযোগ্য ফেব্রিকের গুনগতমান পরীক্ষা করা। এ ছাড়া রপ্তানি ব্যবসায় অংশ নিতে হলে আইনি সাহায্য, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে এখানকার উদ্যোগীদের যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার কাজটিও করবে কেন্দ্র।
সমঝোতা হওয়ার পর কাউন্সিলের প্রস্তাবমতো মেটিয়াবুরুজের রাজাবাগান থানার কাছে নলেজ সেন্টার তৈরির জায়গা দেয় রাজ্য। কারণ বাংলায় পোশাকের মূল বাজারই মেটিয়াবুরুজ। মেটিয়াবুরুজ ছাড়া মহেশতলা ও হাওড়ার বাঁকড়াতেও পোশাক তৈরি হয়। ইদানীং যাদবপুর ও পাইকপাড়ায় কিছু পোশাক কারখানা হয়েছে।
তবে জায়গা দেওয়াতেই থমকে রয়েছে পরিকল্পনা। কারণ এখনও কোনও কাজ শুরুই করেনি কাউন্সিল। কবে কাজ শুরু হবে? কাউন্সিলের অধিকর্তা রঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, ‘গোটা প্রকল্পটি বাণিজ্যমন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে। কিছু টাকা লাগবে। যা এখনও মন্ত্রক থেকে অনুমোদিত হয়ে আসেনি। তবে তাড়াতাড়ি চলে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।’
কাউন্সিলের অধিকর্তা যতই বাণিজ্যমন্ত্রকের হয়ে সাফাই গাক না কেন। কেন্দ্র যে এক্ষেত্রে হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে তা বুঝতে আর বাকি নেই কারও। এর আগেও বহুবার মোদী সরকারের বাংলা বিদ্বেষ প্রকাশ্যে এসেছে। আর এবার সমঝোতা হওয়ার পরেও নলেজ সেন্টার তৈরির ব্যাপারে যেভাবে দেরি করছে কেন্দ্র, তাতে পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে রাজ্যকে।