মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প কন্যাশ্রী পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্তরে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা। একই ভাবে সবুজসাথী, রূপশ্রী, যুবশ্রী-র মতো প্রকল্পগুলিও রাজ্যের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অনুঘটকের কাজ করছে। এবার মমতার আরেক উন্নয়নমূলক প্রকল্প ‘নিজশ্রী’-র শ্রীবৃদ্ধিকে পাখির চোখ করছে রাজ্য।
সেই লক্ষ্যেই আসানসোল, জলপাইগুড়ি ও হলদিয়া চত্বরেও এবার লাগল নিজশ্রীর ছোঁয়া। রাজ্য সরকার দরাজ হাতে প্রায় ১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে এই তিনটি জায়গায় ১৭৬টি ফ্ল্যাট বানানোর জন্য। এগুলির মধ্যে ১১২টি এক বেডরুমের ফ্ল্যাট ও ৬৪টি দুই বেডরুমের। বলা ভালো, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য আবাসনের সংস্থানে মুখ্যমন্ত্রী নিজশ্রী প্রকল্পের সফল রূপায়ণের উপর অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
জানা গেছে, ৩৭৮ বর্গফুটের এক বেডরুম ও ৫৫৯ বর্গফুটের আয়তনের দুই বেডরুমের ফ্ল্যাটের দাম ধার্য হয়েছে যথাক্রমে ৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ও ৯ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা। এই ধরনের অত্যন্ত সুলভ মূল্যের কারণেই নিজশ্রী প্রকল্পকে ঘিরে আমবাঙালির মধ্যে জোর উৎসাহের সঞ্চার হয়েছে।
অন্যদিকে, পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে গোবিন্দপুর মৌজায় ৪৮টি এক বেডরুম ও ৩২টি দুই বেডরুম ফ্ল্যাট বানানোর জন্য ধার্য হয়েছে প্রায় ৭ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া চত্বরে পূর্ব রঘুনাথ চকে ৩২টি এক বেডরুম ও ১৬টি দুই বেডরুম বানাতে খরচ হবে ৪ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা।
সাধারণ মানুষের আবাসনের সংস্থানে সমধিক গুরুত্ব মিলেছে উত্তরবঙ্গেরও। জলপাইগুড়ি জেলার ডাবগ্রামেও ৩২টি এক বেডরুমের ফ্ল্যাট ও ১৬টি দুই বেডরুমের ফ্ল্যাট তৈরিতে খরচ বরাদ্দ হয়েছে সব মিলিয়ে প্রায় ১৭ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা। আবার আসানসোল, জলপাইগুড়ি ও হলদিয়া ছাড়াও দুর্গাপুরের ফুলঝোড় ও উত্তর ২৪ পরগণার অশোকনগরেও এই প্রকল্পে ২১৪টি ফ্ল্যাট বানাতে প্রায় ১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।
এই ব্যাপারে আবাসন দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘নিজস্ব একটি আবাসনের স্বপ্ন প্রত্যেক মানুষই দেখেন। নিজের সেই মাথা গোঁজার জায়গা এক চিলতে হলেও, তাতেই আশ মেটে তাঁদের। কারণ, নীড় ছোট ক্ষতি নেই, আকাশ তো বড়। কিন্তু আজকের দিনে সাধারণ মানুষের আবাসনের স্বপ্ন পূরণের পথে সবচেয়ে বড় অন্তরায় জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাটের চড়া দাম। কিন্তু নিজশ্রী প্রকল্পে ফ্ল্যাট বানানো হবে সরকারি জমিতেই।’
তিনি আরও জানান, ‘নিজশ্রী প্রকল্পে এক বেডরুমের ফ্ল্যাট ও দুই বেডরুমের ফ্ল্যাটের ক্রেতাদের ক্ষেত্রে ঋণে যথাক্রমে ৪০ ও ২০ শতাংশ ভর্তুকিও দেওয়া হবে। এগুলি নিজশ্রী প্রকল্প সাধারণ ক্রেতার আয়ত্তের মধ্য রাখছে।’ সবমিলিয়ে, বাংলার নানা প্রান্তে নিজশ্রীর বিকাশ ঘটাতে এবার তৎপর রাজ্য।