বড়দিনের আগে আবারও প্রকৃতির রোষে ইন্দোনেশিয়া। গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ জাভা ও সুমাত্রা দ্বীপের বিভিন্ন উপকূলে মানুষ যখন ক্রিসমাসের ছুটি কাটানোর মেজাজে, তখনই উত্তাল হয়ে ওঠে সমুদ্র।
সপ্তাহশেষের দীর্ঘ ছুটি কাটাতে বহু মানুষই ভিড় জমিয়েছিলেন ওই অঞ্চলে। সমুদ্রসৈকতে চলছিল উৎসবযাপন। আচমকাই সেখানে আছড়ে পড়ল বিধ্বংসী সুনামি। যার ফলে এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক তাণ্ডবে প্রাণ হারালেন অন্তত ২৮১ জন। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবরে জখম অন্তত ১০৫৭ জন। আর নিখোঁজ কমপক্ষে ৫৭ জন। যত ধ্বংসস্তুপ সরানো হবে, মৃতের সংখ্যা ততই বাড়বে বলে সোমবার আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থা বা বিএনপিবির মুখপাত্র সুতোপো পুরওয়ো নুগ্রোহো।
তবে ভূমিকম্প নয়, স্থানীয় একটি দ্বীপের আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের কারণেই এই সুনামির উৎপত্তি বলে জানা গিয়েছে।
বড় ক্রাকাতাউ আর আনক (শিশু) ক্রাকাতাউ, ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপে রয়েছে এই দুটি আগ্নেয়গিরি। গত ২২ তারিখ স্থানীয় সময় রাত ৯টা নাগাদ আগ্নেয়গিরি জেগে ওঠার পরই রাত ৯.৩০ মিনিট নাগাদ পশ্চিম জাভা এবং দক্ষিণ সুমাত্রার মাঝে সুন্দা প্রণালীতে আছড়ে পড়ে সুনামি। নুগ্রোহো বলেছেন, এপর্যন্ত ৬১১টি বাড়িঘর, ৬০টি দোকান ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে।
কোনও পূর্বাভাস ছাড়াই কীভাবে এমন বিশাল সুনামি আছড়ে পড়ল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই সক্রিয় হয়ে উঠেছিল ক্রাকাতাউ আগ্নেয়গিরি। শনিবার স্থানীয় সময় রাত ন’টা নাগাদ ফের অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। এর ফলে আগ্নেয়গিরি থেকে সৃষ্ট আনাক ক্রাকাতাউ দ্বীপের নীচে, সমুদ্রের গভীরে ভূমিধসের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া, গতকাল পূর্ণিমা থাকায় ঢেউয়ের শক্তি আরও বেড়ে যায়। আর যেহেতু ভূমিকম্পেরও কোনও পূর্বাভাস ছিল না, তাই সুনামির বিষয়ে আগে থেকে সতর্কবার্তা জারি করা যায়নি বলে জানান ইন্দোনেশিয়ার আবহবিদরা। সুনামির তাণ্ডবের ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে জখম ও মৃতদের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো।