এবার হিন্দুত্ববাদীদের কোপের মুখে পড়ে দ্রুত আজমির ছাড়তে হল বলিউডের স্বনামধন্য অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহকে। বিজেপি-সহ কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের বিক্ষোভের জেরে রাজস্থানের আজমিরে এক সাহিত্য উৎসব থেকে বাতিল করে দেওয়া হল তাঁর অনুষ্ঠান।
৬৮ বছরের অভিনেতা কৈশোরে যে স্কুলে পড়েছিলেন, সেই সেন্ট আনসেলম সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলে শুক্রবার সাহিত্য উৎসবের সূচনা হওয়ার কথা ছিল। ওই সাহিত্য উৎসবের শুরুতে মূল ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল নাসিরুদ্দিনেরই। কিন্তু তাঁকে ভাষণই দিতে দিল না বিজেপির যুব শাখা ভারতীয় যুব জন মোর্চা। বিপদে পড়ার আশঙ্কায় উৎসবের মঞ্চে না এসে আজমির ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা।
প্রসঙ্গত, ডিসেম্বরের গোড়ায় উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে গো-হত্যাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ছড়ালে এক পুলিশ অফিসার নিহত হন। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কর্মকর্তাদের একটি বৈঠকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন যে কীভাবে গো-হত্যা হলো সেই তদন্তের ওপরে। আর পুলিশ অফিসারের মৃত্যুকে তিনি বলেছিলেন ‘দুর্ঘটনা’।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ নাসিরুদ্দিনের মন্তব্য, ‘এমন পরিস্থিতি দেখে আমার ভয় নয়, রাগ হচ্ছে।’ সম্প্রতি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আয়োজিত ‘কারওয়ান-এ-মুহব্বত’ নামের এক অনুষ্ঠানের অংশ হিসাবে নাসিরুদ্দিন শাহ একটি ভিডিও সাক্ষাতকার দেন। সেই ছোট্ট ইউটিউব ভিডিওতেই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বিষ সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। যারা আইন নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছে, তারা অবাধে ঘুরছে। আমরা সম্প্রতি দেখেছি, একটি পুলিশ অফিসারের মৃত্যুর চেয়ে একটি গরুর মৃত্যু বেশী গুরুত্বপূর্ণ।’
তারপর থেকেই দক্ষিণপন্থী এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো তার ব্যাপক সমালোচনা শুরু করে। শুক্রবার আজমিরের ওই সাহিত্য উৎসব চত্বরেও এর জেরেই ভারতীয় যুব জন মোর্চা-সহ বেশ কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়। এ প্রসঙ্গে উৎসবের কর্মকর্তা সোমরতন আরিয়া জানিয়েছেন, হাঙ্গামার পরে আমরা ঝুঁকি না নিয়ে তার অনুষ্ঠানটা বাতিল করে দিয়েছি। আমরা আজমিরের বাসিন্দাদের ভাবাবেগকেও সম্মান করি।