বর্তমানে নির্বাচন প্রক্রিয়ার একটা বড় অংশের কাজ হয় মোবাইলের মাধ্যমে। সেই কারণেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের সব বুথকে মোবাইল নেটওয়ার্কের মধ্যে নিয়ে আসার নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন।
প্রাথমিক হিসেবে, দু’হাজার বুথ এখনও মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে রয়েছে। এই সব বুথকে মোবাইল নেটওয়ার্কের মধ্যে নিয়ে আসার জন্য উদ্যোগী হয়েছে নির্বাচন কমিশনের কলকাতার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। প্রত্যেক জেলাশাসককে এজন্য বিস্তারিত সমীক্ষা চালিয়ে ওই ধরনের বুথের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে সর্বত্র মোবাইল নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেওয়া যায়, সেজন্য মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সঙ্গে বৈঠকেও বসবে নির্বাচন কমিশন।
ভোটকর্মীরা বুথে পৌঁছলেন কি না, নিরাপত্তা বাহিনী গেল কি না, মোট কত শতাংশ ভোট পড়ল, কোনও গোলমাল হল কি না- ইদানীংএই সকল তথ্য মোবাইলের মাধ্যমেই প্রিসাইডিং অফিসারদের জানাতে হয়। প্রতি ঘণ্টায় তাঁদের আপডেট দিতে হয় এসএমএস বা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে। এবং সবটাই সাংকেতিক শব্দে। এমনকি বুথ থেকে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের দফতরে বসে ভোট দেখার জন্য ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থাও হয় মোবাইলের মাধ্যমে। ফলে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকলে পুরো ব্যাপারটাই ভণ্ডুল। তাই নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে কমিশন।
প্রাথমিকভাবে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, রাজ্যের ১৫০০ বুথে মোবাইলের কানেকশন নেই। অর্থাৎ ওই সব বুথ থেকে এসএমএস করে প্রতি ঘণ্টায় আপডেট জানাতে পারবেন না প্রিসাইডিং অফিসাররা। আর দু’হাজার বুথে ইন্টারনেট কানেকশন নেই। ফলে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে কোনও আপডেট পাঠানো যাবে না। তাই ঠিক হয়েছে, রাজ্যের বড় চারটি মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডার জিও, এয়ারটেল, ভোডাফোন ও বিএসএনএলের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা।
তবে শুধু রাজ্যস্তরেই নয়, জেলাস্তরেও মোবাইল সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে বসতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলাশাসকরা যে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করেছেন, তাতে পাহাড়, সুন্দরবন, জঙ্গলমহলের কিছু এলাকায় এখনও মোবাইলের নেটওয়ার্ক নেই। মঙ্গলবার জেলাশাসকদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে নেটওয়ার্ক না থাকা এলাকার একটি প্রাথমিক তালিকা জমা দেওয়া হয়। আরও বিস্তারিত সমীক্ষার কাজ শেষ করে জানুয়ারি মাসে মোবাইল সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, দু’মাসের মধ্যে তাদের মোবাইল টাওয়ার বসানোর জন্য অনুরোধ করা হবে।