১৯৮০ সালে ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের ধারে তৈরি ডুমুরজলা স্টেডিয়ামটি কার্যত ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পড়ে ছিল বাম আমলে। এই স্টেডিয়ামটিকে পুনর্নিমাণের দিকে কোন নজরই দেননি তৎকালীন বাম সরকার। কিন্তু রাজ্যের হাল ধরে হাওড়া পুরসভার অন্তর্গত এই স্টেডিয়ামটিকে সংস্কার করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উদ্যোগেই কিছুদিনের মধ্যেই চালু হতে চলেছে নবরুপে আন্তর্জাতিক মানে তৈরি ডুমুরজলা ইনডোর স্টেডিয়াম৷
নবান্ন থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই স্টেডিয়ামটিকে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন করে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল প্রায় বছর দেড়েক আগে। বর্তমানে কাজ প্রায় শেষের মুখে। শিবপুর আইআইইএসটি–র বিশেষজ্ঞদের দিয়ে এই ডুমুরজলা ইনডোর স্টেডিয়ামের নতুন নকশা বানানো হয়েছে। রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তর তৎক্ষণাৎ এই কাজের জন্য ১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। পাশাপাশি হাওড়া পুরনিগমও অর্থ বরাদ্দ করেছে। এখনও পর্যন্ত স্টেডিয়ামটি তৈরির জন্য ২২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
সূত্রের খবর, নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের থেকেও উন্নত মানের করে গড়ে তোলা হচ্ছে এই স্টেডিয়ামটিকে। ৩ হাজার থেকে আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৬ হাজার করা হচ্ছে। আমূল বদলে দেওয়া হয়েছে স্টেডিয়ামের ছাদ, মেঝে, খেলোয়াড়দের ঘর, বিশ্রামকক্ষ, পোশাক বদলের জায়গা–সহ কমিউনিটি হলও। থাকছে অত্যাধুনিক মানের ভিডিওগ্রাফির ব্যবস্থা, সিন্থেটিক কাঠের তৈরি মেঝে। স্টেডিয়ামের ছাদ বাড়িয়ে ৮০ ফুট উঁচুতে করা হয়েছে। ৫০ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে গড়ে তোলা অত্যাধুনিক মানের ইনডোর স্টেডিয়ামটি পুরোটাই হচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। থাকছে পাওয়ার রুম, ধারাভাষ্য কক্ষ। সেই সঙ্গে খেলোয়াড় ও কর্মীদের থাকার জন্য ঝকঝকে গেস্ট হাউস। এখানে ১০টি দলের সদস্যরা একসঙ্গে থাকতে পারবেন। স্টেডিয়ামের মধ্যে ভলিবল, বাস্কেটবল, পাওয়ার লিফটিং, ক্যারম, জিমন্যাসটিক্স–সহ বিভিন্ন ধরনের ইনডোর গেমসের আয়োজন থাকছে। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও থাকবে।
সম্প্রতি ক্রীড়া ও যুবকল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এই স্টেডিয়াম তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে যান। পুরবোর্ডের বিদায়ী মেয়র ডাঃ রথীন চক্রবর্তী জানান, ‘খুব শিগগিরই স্টেডিয়ামটির উদ্বোধন হয়ে যাবে। ক্রীড়ামন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে দিয়ে স্টেডিয়ামটি উদ্বোধন করানোর পরিকল্পনা আছে।’ ক্রীড়া রাষ্ট্রমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা জানান, বিভিন্ন ইনডোর গেমস এবং সেই সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ছাড়া অন্য কোনও অনুষ্ঠান হবে না এখানে। বাম আমলে যে স্টেডিয়ামের দিকে নজরই দেওয়া হত না, হত না কোন ইনডোর গেমস , বরাতজোরে এখানে টিভি চ্যানেলের কিছু রিয়্যালিটি অনুষ্ঠান বা ছোটখাটো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হত। সেই স্টেডিয়াম মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে সম্পূর্ণ নতুন রূপে আত্ম প্রকাশ করতে চলেছে আর কিছুদিনের মধ্যেই।