অন্য সময়ের মতো ডার্বি ম্যাচের আগের উত্তাপটা মোহনবাগান শিবিরে গেলে বোঝা যাচ্ছে না। বরং বলা ভাল একেবারে বিনা হইচইয়ে রবিবারে আই লিগের প্রথম ডার্বির জন্য তৈরি হচ্ছে বাগান ব্রিগেড। দলকে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে মোহনবাগান কোচ শঙ্করলালের চাপমুক্ত রাখার কৌশলটা অজানা নয়। আগের মতোই নিজের দলের ফুটবলারদের মুখে কুলুপ এঁটেছেন তিনি। ডার্বির আগে প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গল শিবিরকে তেতে উঠতে না দেওয়ার বাড়তি সতর্কতা। ডার্বি নিয়ে এতটাই সিরিয়াস বাগান কোচ শঙ্করলাল যে, নিজের জন্মদিন পালনের উৎসবে রাজি হননি। শুভেচ্ছা জানিয়েই তাই ক্ষান্ত থাকতে হয়েছে ফুটবলারদের। বাগান ফুটবলাররা কথা দিয়েছেন, ডার্বি জিতে জন্মদিনের উপহার দেবেন শঙ্করলালকে। ফুটবলারদের চাঙ্গা করতে এগিয়ে এসেছেন বাগান–কর্তারা। এক মাসের মাইনে বাকি ছিল ফুটবলারদের। সেটা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানালেন অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত। ইস্টবেঙ্গল শিবিরে যখন স্প্যানিশ স্ট্রাইকার এনরিকের চোটের কথাটা নানাভাবে এড়ানোর চেষ্টা চলছে, তখন বাগানে সনি নর্ডির চোট নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গলকে ধাঁধায় রাখতে এটা করা হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে।
অন্যদিকে, কথা বলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর রুদ্ধদ্বার অনুশীলন করালেন ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেয়ান্দ্রো মেনেনদেস গার্সিয়া। ক্লাব মাঠের অবস্থা দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। ফলে মাত্র একদিন ক্লাবের মাঠে অনুশীলন করেই ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ দলবল নিয়ে ফের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে।
আগেই বলা হয়েছিল বন্ধ দরজার আড়ালে অনুশীলন করবেন। যাতে সংবাদমাধ্যম বা সমর্থকরাও প্রিয় দলের অনুশীলন দেখতে না পারেন। কিন্তু লোহার তারের জাল দিয়ে ঘেরা যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে রুদ্ধদ্বার অনুশীলন সম্ভব নয়। তাই কালো কাপড় দিয়ে মাঠ ঢাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দলের নয়া বিদেশি হামেস স্যান্টোস কোলাডোর ছাড়পত্র সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজ চলে এসেছে। স্প্যানিশ উইঙ্গারটি আট নম্বর জার্সি পড়ে খেলবেন। তাঁকে ডার্বিতে পাওয়া যাবে নিশ্চিত হতেই স্বস্তি আলেয়ান্দ্রোর। চোটের জন্য ডার্বিতে নেই এনরিকে।
তবে ডার্বিতে যে যেকোনও মূল্যে গোল আটকানো যে প্রথম পছন্দ তা লুকিয়ে চুরিয়ে দেখা অনুশীলনে প্রমাণিত। বক্সের সামনে অযথা ফাউল করে প্রতিপক্ষকে সুযোগ দিতে রাজি নন লাল হলুদ কোচ। সেকথা ফুটবলারদের বুঝিয়ে দিয়েছেন। ফাউল নয়, বুদ্ধি করে বল কেড়ে নেওয়া বা বলকে বিপদসীমার বাইরে করে দেওয়ার পদ্ধতি রপ্ত করাচ্ছেন। তাই বলাই যায় ঘর সামলে আক্রমণের ঝড় তোলাই আলেয়ান্দ্রোর ডার্বির কৌশল।