বাঙালির কাছে শীতকালের অন্যতম আকর্ষণ শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা। শীতকালের অনেক আগে থেকেই চলে মেলার জন্যে হোটেলে ঘর বুক করা। পৌষ মেলার শান্তিনিকেতন ঠিক যেন বাংলার মধ্যেই এক টুকরো বাংলা। তবে ইচ্ছে থাকলেও বিভিন্ন কারণে অনেকেই শান্তিনিকেতন গিয়ে উঠতে পারেন না। তাঁদের কথা ভেবেই এবং রাজ্যের নিজস্ব একটি শীতকালীন মেলার আয়োজনের উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকারি উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘কলকাতা পৌষ উৎসব’। উদ্বোধন করবেন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা।
সরকারি উদ্যোগে হিডকো-র সহযোগিতায় এই মেলার আয়োজন করেছে লিঙ্ক আপ। ২৩ থেকে ৩০শে ডিসেম্বর কলকাতার নিউ টাউনের রবীন্দ্র তীর্থে বসতে চলেছে এই মেলাটি। পৌষ মেলার মত করেই সাজানো হবে এই মেলা।
লিঙ্ক আপের কর্ণধার পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘কলকাতা পৌষ উৎসবে প্রদর্শনী স্টল হবে ২৫টি। ৬টি জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা বসবেন তাঁদের শিল্পকাজের পসার নিয়ে। দার্জিলিং থেকেও মহিলারা আসবেন বিভিন্ন রকমের শীতবস্ত্র নিয়ে। থাকবে শীতের বিভিন্ন খাবারের ৩৫টি স্টল। বেলা ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। অনুষ্ঠান হবে ৬টা থেকে ৮টা। প্রবেশ অবাধ।’
রবীন্দ্রতীর্থের বাইরে খোলা মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অলকানন্দা রায়ের পরিচালনায় রবীন্দ্রনাথের নৃত্যনাট্য বাল্মিকী প্রতিভা অনুষ্ঠিত হবে। নৃত্যানুষ্ঠান করবেন অমিতা দত্ত । তাছাড়াও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, রেজওয়ানা চৌধুরি বন্যা, কার্তিকদাস বাউল, শ্রীজাত, স্বপন বসুর মতো স্বনামধন্য শিল্পীরাও অনুষ্ঠান করবেন। রবীন্দ্রতীর্থের কিউরেটর অনুপ মতিলাল জানালেন, একদম শান্তিনিকেতনের মতো করেই সবকিছু সাজানো হবে। আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ ছত্রপতি দত্ত মেলার লোগো ও সাজসজ্জা ডিজাইন করেছেন।
হিডকো-র চেয়ারম্যান ও তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব দেবাশিস সেন বুধবার এই মেলার ঘোষণা করে বলেছেন, ‘রবীন্দ্রতীর্থকে আমরা কলকাতার একটুকরো শান্তিনিকেতন হিসেবেই দেখি। বসন্ত উৎসব, ২৫শে বৈশাখ ও ২২শে শ্রাবণ ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয় এখানে। এবার পৌষমেলাও হচ্ছে।’
এই মেলার পাশাপাশি শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরির আদলে একটি গ্রাম্য মেলারও আয়োজন করা হয়েছে। পৌষমেলার শেষ হওয়ার আগের দিন, ২৯ ডিসেম্বর থেকে আড়ম্বরহীন এই মেলা বসবে নিউ টাউনের শিবতলায়। চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কোনও মঞ্চ থাকবে না। শতরঞ্চি পেতে বাউল, ফকিররা গান গাইবেন। বিভিন্ন জেলার হস্তশিল্পীদের সম্ভার থাকবে।