‘যারা ভাঙতে এসেছিলেন, মঙ্গলবার তাঁরা নিজেরাই গুঁড়িয়ে গেছেন।’ মোদী-শাহের অশ্বমেধের ঘোড়া ৫ রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়ার পর, বিজেপিকে এই ভাষাতেই কটাক্ষ করলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
গতকাল বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর রাজ্যস্তরের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করতে ঝাড়গ্রামে আসেন শিক্ষামন্ত্রী। সেখানেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘২০১৯ পর্যন্ত বিজেপিকে কি অপেক্ষা করতে হবে? আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন যা বলে এসেছেন, এখন তাই ঘটছে। বিজেপির এই জনবিরোধী নীতির ফলে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। মানুষের কন্ঠ জোর করে চেপে রাখা যায় না। সবাইকে শান্ত থাকতে হবে। ভেঙে দিয়ে কিছু হবে না। যারা ভাঙতে এসেছিলেন, মঙ্গলবার তাঁরা নিজেরাই গুঁড়িয়ে গেছেন।’
এখানেই থেমে না থেকে তিনি আরও বলেন, ‘এখন ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে কোনও লাভ নেই। এতদিন অনেক গোলাগুলি চালিয়েছে। কিন্তু তারা লাভ করতে পারেনি। মানুষ শান্তি, সম্প্রীতি, সংহতি চায়। একসঙ্গে থাকতে, একসঙ্গে বাঁচতে, একসঙ্গে উন্নয়নের স্বাদ বহন করতে চায়। তাই মুখ্যমন্ত্রী বাংলাকে বিশ্ব বাংলায় পরিণত করার লক্ষ্য নিয়েছেন। আমাদের সদা জাগ্রত থাকতে হবে, তাঁর পাশে থাকতে হবে।’
বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাধিপতি শ্রীমতী মাধবী বিশ্বাস ও জেলাশাসক আয়েষা রানি-সহ অন্যরা। গতকাল শিক্ষামন্ত্রী প্রথমেই যান ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে। সেখানে তিনি বলেন, ‘আদিবাসীদের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে এভাবে কাজ করতে দেখিনি। আমার মনে পড়ে না আদিবাসীদের সার্বিক উন্নয়ন, তাঁদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে এর আগে এভাবে কেউ আন্তরিকতা ও ভালবাসা দিয়ে ভেবেছেন। সকলেই জানেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য, খাদ্য, রাস্তাঘাট, পানীয় জলের ব্যবস্থা, মাথার ওপর ছাদ, বিদ্যুৎ, কর্মসংস্থান ইত্যাদিতে আগের তুলনায় অনেক এগিয়ে গিয়েছে জঙ্গলমহল। আরও উন্নয়ন হবে।’
প্রসঙ্গত, রাজ্যস্তরের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় আদিবাসীদের ২২ গোষ্ঠীর ১৩৬ দলের ১৫০০জন প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিলেন। এই প্রতিযোগিতা চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। গতকাল অনুষ্ঠানের পর শিক্ষামন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নেন শিখা মাণ্ডি (সাঁওতালি ভাষায় রবীন্দ্র সংগীত), রুবি হেমব্রম(আদিবাসী সাহিত্য, ছোটো গল্প ও আদিবাসী ওয়েবসাইট তৈরি), সারিধরম হাঁসদা(সাঁওতালি সাহিত্যে), কালীপদ সরেন(সাঁওতালি সাহিত্য)। এছাড়াও বীরবাহা হাঁসদা(সাঁওতালি সিনেমা), দিগির সরেন (সাঁওতালি সংগীত শিল্পী), স্বরূপ শবর(মানবাজার ১ নম্বর ব্লকে স্কুলের জন্য জমি দান)।
এছাড়া, গতকাল জঙ্গলমহলে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ও আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি ইংরেজি ভাষা শিক্ষার কর্মসূচীরও উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী।