কৌন বনেগা সিএম? আপাতত কোটি টাকার প্রশ্ন এটাই। শুধু রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় নয়, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে গোটা দেশ। আজ বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন রাহুল গান্ধী। তার আগে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না জানা গেলেও দলের বিভিন্ন সূ্ত্রে খবর, সব পক্ষকেই তুষ্ট করে সমঝোতার রাস্তাতেই হাঁটতে চলেছেন কংগ্রেস সভাপতি।
সামনেই লোকসভা ভোট। তাই এই মুহূর্তে কাউকে গুরুত্বহীন করে দেওয়া বা কাউকে খুব বেশি গুরুত্ব দিলে লোকসভা ভোটে তার ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে। আবার তিন রাজ্যের বিধানসভা ভোটের এই সাফল্য লোকসভা ভোটের প্রচার পর্যন্ত জিইয়ে রাখা এবং পারস্পরিক সৌহার্দ্যের ছবি ধরে রাখাও বড় চ্যালেঞ্জ রাহুলের কাছে। তাই আপাতত শ্যাম এবং কূল দুই-ই রাখার পথেই রাহুল এগোচ্ছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। তবে নবীনের থেকে প্রবীন নেতাদের দিকেই পাল্লা ভারী বলে মনে করছে কংগ্রেসের একাংশ।
ছত্তিশগড়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন ৩ জন। ভূপেশ বাঘেল, তাম্রধ্বজ সাহু এবং টি এস সিংহদেও। বুধবারই ঝাড়খণ্ডে গিয়ে দলের জয়ী বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মল্লিকার্জুন খড়্গে। কিন্তু তাতেও সমাধান সূত্র মেলেনি। বল সেই রাহুলের কোর্টেই। ফর্মুলাও একই। সব পক্ষকেই সমান দায়িত্ব দেওয়ার কথাই ভাবছেন রাহুল।
মধ্যপ্রদেশের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত। দলীয় সূত্রে খবর, কমলনাথকে মুখ্যমন্ত্রী করা হচ্ছে এবং উপ মুখ্যমন্ত্রীর পদ পাচ্ছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তাতে শ্যাম ও কূল দুই-ই রক্ষা হবে। ইন্দিরা গাঁধীর সময় থেকে প্রায় টানা সাংসদ এবং গাঁধী পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ কমল নাথ। মধ্যপ্রদেশে জয়ের কাণ্ডারিও তিনি। তারপরও তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে দূরে রাখলে কার্যত তাঁর সঙ্গে অবিচারই হবে। আবার জ্যোতিরাদিত্য তরুণ ব্রিগেডের নেতা, রাহুলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তিনি নিজেও ঠারেঠোরে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। মাধবরাও সিন্ধিয়ার উত্তরাধিকারী হিসেবে মধ্যপ্রদেশে তিনিও বেশ জনপ্রিয়। ফলে কোনও পক্ষই যাতে অসন্তুষ্ট না হয়, সেরকম পথই খোঁজার চেষ্টা চলছে দলের অন্দরে। তাতেই উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রী এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রীর এই সূত্র।
রাজস্থানে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী-উপ-মুখ্যমন্ত্রীর ফর্মুলা না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। টানাপড়েন অশোক গেহলট এবং সচিন পাইলটকে নিয়ে। সূত্রের খবর, পাল্লা ভারী অশোক গেহলটের দিকেই। যদিও ভোটে জয়ের কারিগর হিসাবে রাজ্যের নেতারা প্রদেশ সভাপতি সচিন পাইলটের গুরুত্বও খর্ব করতে নারাজ। বিশেষত ২০১৩-র শোচনীয় ফলের পর যে ভাবে দল ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তার কৃতিত্বের দাবিদার অনেকটাই রাজেশ পাইলট পুত্রের। ফলে স্নায়ুর লড়াই চরমে। দলের অন্দরমহলে গুঞ্জন, যাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করা হোক, অন্য জনকে দিল্লিতে গুরুত্ব বাড়িয়ে দেওয়া হবে। লোকসভা ভোটেও তাঁকে বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।