শেষ পর্যন্ত বাংলা ছাড়া হল বিজেপির রথ। হাইকোর্টের নির্দেশের পর বাংলায় যে রথযাত্রা করা একপ্রকার অসম্ভব সেটা বুঝেই রাজ্যে ঢুকে পড়া রথটিকে সরিয়ে নিল তারা। বাকি রথগুলিকেও আটকে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক মহল এটাকে তৃণমূলের কৌশলগত জয় হিসাবেই দেখছে।
প্রথম রথটির কোচবিহার থেকে যাত্রা শুরু করার কথা ছিল ৭ ডিসেম্বর। যাত্রার সূচনা করার কথা ছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের। সেই জন্য ৫ ডিসেম্বর নয়ডা থেকে বিহার হয়ে কিষাণগঞ্জ দিয়ে শিলিগুড়ি ঢোকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়ার কনভয় দিয়ে সেটিকে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় একটি হোটেলের সামনে ত্রিপল ঢাকা দিয়ে রাখা ছিল। জানা গিয়েছে, এই ডামাডোলের মধ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ রথটিকে বাংলা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। শনিবার কাকভোরে সেটি শিলিগুড়ি হয়ে বিহারে চলে গিয়েছে।
গঙ্গাসাগরের রথটিও ঝাড়খণ্ড থেকে রাজ্যে ঢুকে কলকাতা হয়ে কাকদ্বীপে পৌঁছত। রবিবার সেটির কাকদ্বীপ থেকে যাত্রা শুরুর কথা ছিল। কিন্তু সেটিকেও ঝাড়খণ্ডেই থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর তারাপীঠ থেকে যে রথটির যাত্রা শুরু করার কথা ছিল, সেটি অবশ্য নয়ডার ওয়ার্কশপ থেকে বের করাই হয়নি।
এই রথযাত্রা নিয়ে বিশাল কর্মকাণ্ড ছিল বিজেপির। পরিস্থিতি সবকিছুতেই জল ঢেলে দিয়েছে। রথগুলি আসলে অত্যাধুনিক ভলভো বাস। তাতে রয়েছে একটি ডবল বেড, একটি ডিভান কাম বেড, যাতে তিনজন শুতেও পারবেন। ছোট একটি খাবার টেবিল এবং শৌচাগারও রয়েছে। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এই বাসে ওয়াইফাই, ইন্টারনেট, জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম- কী নেই! দলের প্রতীক সম্বলিত একটি হাইড্রলিক মঞ্চও রয়েছে, যেটিকে বাসের মধ্যেই গুটিয়ে রাখা যায়। সভার সময় সেটিকে বাসের উপরে তুলে দেওয়া যায়। তাতে তিনজন বক্তা দাঁড়াতে পারবেন। ফলে আলাদা মঞ্চের ব্যবস্থাও করতে হবে না। সব কিছু দেখভাল করতে চালক ছাড়াও চারজন প্রথম বাসের সঙ্গে এসেছিলেন। তার মধ্যে একজন সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার, একজন মেকানিক, একজন সাধারণ টেকনিশিয়ান এবং একজন সহকারী। তাঁরা প্রত্যেকেই দলের কর্মী এবং উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। একাধিক রথযাত্রার অভিজ্ঞতা তাঁদের রয়েছে। শিলিগুড়িতেই তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আপাতত তাঁরা বিজেপির রথ ওরফে বাস নিয়ে বাংলা ছেড়ে চলে গিয়েছেন বিহারে।