গোধরার কালো অধ্যায় যেন কিছুতেই পিছুই ছাড়ছে না নরেন্দ্র মোদীর। ২০০২-এর গুজরাট দাঙ্গায় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিনচিট দিয়েছিল বিশেষ তদন্তকারী দল। সেই ঘটনার বিরুদ্ধে শুনানি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা এহেসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া জাফরি। জাকিয়ার আবেদনে সুপ্রিম কোর্ট সাড়া দিয়ে শুনানিতে রাজি হলেও শুনানির দিন পিছিয়ে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গোধরা স্টেশনে সবরমতি এক্সপ্রেসের কয়েকটি কামরায় আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল একদল দুষ্কৃতী। মৃত্যু হয় ৫৯ জন সাধু-সন্ন্যাসীর। তার পরই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গুজরাট। ২৮ ফেব্রুয়ারি আহমেদাবাদের গুলবার্গ সোস্যাইটিতে ৬৮জন মুসলিমকে খুন করা হয়। যার মধ্যে ছিলেন তৎকালীন কংগ্রেস সাংসদ এহেসান জাফরি। তাঁর স্ত্রী জাকিয়া জাফরির অভিযোগ, এহসানকে আততায়ীরা ঘর থেকে টেনে বের করে রাস্তায় কুপিয়ে আগুন লাগিয়ে দেন।
একইসঙ্গে জাকিয়া আরও জানান, কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা সাহায্য চেয়ে থানায় বহুবার ফোন করলেও কেউ ফোন তোলেননি। অর্থাৎ এর পিছনে ছিল কোনও গভীর ষড়যন্ত্র। এবং এই হিংসাত্মক ঘটনায় মোদীও যুক্ত ছিলেন। ফলে তাঁকে ক্লিনচিট কেন? সুপ্রিম কোর্টে এই প্রশ্নই তুলেছিলেন তিনি।
২০০৮ সালে জাফরির অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পেয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল তদন্ত করে। তৎকালীন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ২০১০ সালে নয় ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয়। এরপরে মোদী-সহ মোট ৬০ জনকে অব্যাহতি দেওয়ার পর সিট জানায়, শাস্তিযোগ্য কোনও অপরাধ মোদীর বিরুদ্ধে পাওয়া যায়নি। ২০১২ সালে জাকিয়া জাফরি এই রিপোর্টের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। ২০১৩ সালেও নিম্ন আদালত সিটের রিপোর্টকেই মান্যতা দেয়।
এতকিছুর পরেও ২০১৪ সালে সিটের রিপোর্টের বিরুদ্ধে গুজরাট হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন জাকিয়া। তাঁর সঙ্গে যৌথভাবে আবেদন করেছিল সমাজকর্মী তিস্তা সেলভড় পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জাস্টিস ফর পিস-ও। তবে গতবছরও
হাইকোর্ট তাঁর আবেদন খারিজ করার পর হাল না ছেড়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন জাকিয়া। অবশেষে সর্বোচ্চ আদালতের তরফে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে এই মামলার শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।