আবারও অশান্ত আমডাঙা। প্রায় দু’দিন নিখোঁজ ছিলেন বহিষগাছির বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী মোস্তাফা আলি (৩২)। অবশেষে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা অঞ্চলে। সোমবার সকালে আমডাঙার বেড়াবেরিয়ার আটঘরার একটি পুকুর থেকে মোস্তফার মৃতদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশে খবর দেওয়া মাত্রই তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে আনে। এবং পরে তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
মোস্তাফা খুনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আটঘরা এলাকা থেকে বহু মানুষ এসে ভিড় জমান। এ ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। প্রায় সকলেরই দাবি, এলাকায় অশান্তি ছড়াতে এখন সিপিএমের সঙ্গে যোগ দিয়েছে বিজেপিও। মোস্তাফা খুনের ঘটনায় তাঁদের অভিযোগের আঙুল একপ্রকার বিজেপির দিকেই।
তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন আমডাঙার তৃণমূল বিধায়ক রফিকুর রহমানও। বিজেপির নাম না করে তাঁর অভিযোগ, ‘খুন করা হয়েছে মোস্তাফা আলিকে। এলাকায় ফের সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করার জন্যই এই কাজ করা হয়েছে। মোস্তাফার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’ একইসঙ্গে তাঁর গলায় শ্বাসরোধ করার দাগ দেখতে পাওয়া গিয়েছে বলে জানান রফিকুর। পুলিশের কাছে তিনি দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি করেন। আমডাঙা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতির্ময় দত্ত বলেন, ‘এর আগেও সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করা হয়েছে আমডাঙায়। প্রায় মাস তিনেক আগে তিনজন তৃণমূল কর্মীকে খুনও করা হয়েছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, ওই পুকুরে স্থানীয়রা জাল ফেলেছিলেন মাছ ধরার জন্য। সেই জালেই উঠে আসে মোস্তাফার দেহ। জানা গেছে, এলাকার তৃণমূল কর্মী মোস্তাফা দিনমজুরের কাজও করতেন। তাঁর বাড়িতে রয়েছেন মা, বাবা ছাড়াও স্ত্রী-সহ দুই সন্তান। নেশাজাত কোনও দ্রব্য খাওয়ানোর পর তাঁকে খুন করা হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রায় তিনমাস আগে আমডাঙার তিন তৃণমূল কর্মী-সহ মোট চারজন খুন হওয়ার পর গোটা আমডাঙা জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। এরপরই তৃণমূল কর্মীদের খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সিপিএম কর্মী জাকির ভল্লুক-সহ প্রায় ৫০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় বোমা এবং অস্ত্রও।
উল্লেখ্য, ডিসেম্বরে মাসেই আমডাঙার তিনটি পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন হওয়ার সম্ভবনা ছিল। কিন্তু মোস্তফা আলির মৃত্যুর পর সেই বোর্ড গঠন প্ৰক্রিয়া আদৌ হবে কিনা, তা নিয়ে ফের অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়েছে।