লোকসভা ভোটের ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে চাইছে বিজেপি। এমনি সময়ে চলে হিন্দুত্ববাদের প্রচার করে মানুষকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা আর এই ভোটের মুখে বিরোধী দলের কর্মীদের আক্রমণের মাধ্যমে সংঘর্ষের আবহই জারি রাখতে চাইছে ‘রামভক্তরা’। আরও একবার দু’জন তৃণমূল কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠলো বিজেপির বিরুদ্ধে।
বিনপুরের হাঁড়দায় দুই তৃণমূলকর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে ওই তৃণমূল কর্মীদের বাড়ির পাশেই ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে যাওয়ায় পুলিশি টহল শুরু হয়েছে। সন্ত্রাসবাদী বিজেপি কর্মীদের ছোঁড়া গুলিতে একজন তৃণমূল কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে হাঁড়দা নিবাসী ওই আহত কর্মীর নাম মঙ্গল দুলে (৩৫)।
আহত ব্যক্তিকে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাঁ হাতে গুলি লেগেছে তাঁর। তিনি সাংবাদিকদের জানান, শনিবার রাত প্রায় ৯টা নাগাদ অরো এক তৃণমূলকর্মী বিমল মণ্ডলের সঙ্গে দলের অফিস থেকে বাড়ি ফিরে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। দু’জনের বাড়িই পাশাপাশি। অভিযোগ, এই সময় আচমকা বিজেপি কর্মী অনুপ সিং সেখানে এসে তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। মঙ্গল তার আগ্নেয়াস্ত্রটি ধরে ফেলায় হাতে গুলি লেগেছে বলে অভিযোগ। সেই সময় অনুপের সঙ্গে আরও ৪–৫ জন ছিল। দু’ রাউন্ড গুলি চালানোয় তাঁর বাড়ির দরজা পর্যন্ত ফুটো হয়ে গেছে বলে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন মঙ্গল।
সুত্রের খবর, এর আগে বেশ কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় বিজেপির কর্মীরা ইচ্ছাকৃত ভাবে তৃণমূল কর্মীদের সাথে গণ্ডগোল করেছে। তারা একজনকে মারধর করেছে বলেও জানা গেছে। তাই স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে এভাবেই ভয় দেখিয়ে ভোটব্যাঙ্ক দখল করার ঘৃণ্য পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি।
স্বাভাবিক ভাবেই ঘটনার দায় অস্বীকার করেছে তারা। এই ঘটনা প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিজেপি এই ধরনের রাজনীতি করে না। আমাদের জেলা কমিটির সদস্য রাজেশ মণ্ডল হাঁড়দায় থাকেন। তিনি বেশ জনপ্রিয়। তাই রাজেশকে যে কোনও ভাবেই হোক মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে চাইছে তৃণমূল। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।’ যদিও এমন অর্থহীন হাস্যকর মন্তব্য মোটেও ধোপে টেঁকেনি কারণ আহত এবং প্রত্যক্ষদর্শী ওই দুই কর্মী পুলিশকে দেওয়া জবানবন্দীতে জানিয়েছেন অনেক দিন ধরেই তাঁরা আক্রমণের লক্ষ্যে ছিলেন।
তৃণমূল জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক উজ্জ্বল দত্ত বলেন, ‘জঙ্গল মহলে যারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল, তার মধ্যে বিজেপি অন্যতম। ওদের পঞ্চায়েত সদস্য, পঞ্চায়েত প্রধানসহ অনেকেই তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। এই অবস্থায় ঝাড়খণ্ড থেকে বন্দুকবাজদের নিয়ে এসে রাতের অন্ধকারে হাঁড়দায় আমাদের এক কর্মীকে গুলি করে খুন করার চেষ্টা করেছিল। আমরা এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করব।’ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির ঘোষণা করেছেন৷