বনধ মানে পিছিয়ে যাওয়া, কর্মদিবস নষ্ট করা, এই যুক্তিকে অবহেলা করে নিজেদের একগুঁয়ে আচরণ জারি রেখে কাজের দিনে বনধ, মিটিং-মিছিল জারি রাখল আলিমুদ্দিন। নিজেদের মৃতপ্রায় পুরনো অহংকারে প্রাণ ফেরানোর লক্ষ্যে ঠিক সপ্তাহের মাঝেই কৃষক ও খেতমজুর সংগঠনের লং মার্চ তথা পদযাত্রার আয়োজন করেছিল তারা। ফল, যানজটে ভুগতে হল সাধারণ মানুষকে।
সিঙ্গুর থেকে শুরু হওয়া এই পদযাত্রা বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে হাওড়া হয়ে কলকাতায় আসে। পরবর্তী কয়েক ঘণ্টা ধরে ধর্মতলার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশ চলে । এর ফলে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট। বিভিন্ন রাস্তায় যানজটে আটকে যায় গাড়ি। আটকে পড়ে স্কুলবাস এমনকি অ্যাম্বুলেন্সও। কলকাতা পুলিশ ঠিক সময়ে হাল না ধরলে শহরবাসীর দূর্ভোগ আরও বাড়ত।
বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কলকাতার যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও সমস্যা শুরু হয় যখন কয়েক হাজার সমর্থক শিয়ালদহ থেকে মিছিল শুরু করে। দিনের অন্যতম ব্যস্ত সময়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলি সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষ প্রবল সমস্যার মুখোমুখি হন। মৌলালি মোড় হয়ে এসএন ব্যানার্জি রোড ধরে মিছিলকারীরা ধর্মতলায় পৌঁছয় ১টার কিছু পরে। কিন্তু এই মিছিলের জেরে কেবল এসএন ব্যানার্জি রোডই নয়, একই সঙ্গে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোড, আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস রোড, সিআইটি রোড, মহাত্মা গান্ধী রোড, নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট, লেনিন সরণী সহ ওই তল্লাটের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ যানজট তৈরি হয়। অবস্থা এমন জায়গায় পৌছয় যে, পুলিশ এসএন ব্যানার্জি রোড সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। গাড়ি ঘুরিয়ে দিতে হয় এজেসি বোস রোড দিয়ে। ফলে পার্ক স্ট্রিট-মল্লিকবাজার চত্বরেও গাড়ির গতি হয়ে যায় শ্লথ।
সবচেয়ে বেশী দুর্ভোগ হয় হাওড়া থেকে আসা মূল মিছিলের জন্য। মিছিলটি আসে হাওড়া ব্রিজের একটি লেন ধরে। পুলিশ কোনরকমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। মিছিল ব্রাবোর্ন রোডে আসার পর অবস্থা নাগালের বাইরে চলে যায়। একই দশা হয় বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট ও চৌরঙ্গি রোড চত্বরেও। পুলিশ জানিয়েছে, এই মিছিলটি অনেক লম্বা হওয়ায় এই দুটি এবং সংলগ্ন রাস্তাগুলিতে ২০-২৫ মিনিট করে যান চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। জওহরলাল নেহরু রোড ফ্লাইওভারেও সারি সারি গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। ধর্মতলা এক সময় কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় স্থানীয় ও দূরপাল্লার অনেক বাসও সময়ে ছাড়তে পারেনি।