প্রভুভক্ত বলেই সুখ্যাতি তার৷ একটু খাবার দিলেই সন্তুষ্ট তারা৷ নিজেই সবার নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়৷ বাড়িতে কিংবা পাড়ায় কুকুর নিয়ে চিত্রটা প্রায় সবজায়গাতে একই হয়৷ পাড়ায় কুকুরদের অনেকেই বিস্কুট খাওয়ান রোজ৷ কেউ কেউ ওরা অসুস্থ হলে দেখভালও করেন৷ আর সেই কুকুরেরাও ‘বাধ্য’ হয়ে সারা পাড়ায় বিচরণ করে৷ কামড়ানো বা তাড়া করার মত ‘গর্হিত’ কাজ মোটেও করে না! তবে ঘটনা একটু বদলে গেছে উত্তরপ্রদেশের রামপুরে৷ একদিনেই ২৬ জনকে কামড়ে হাসপাতালে পাঠাল একটি পথের কুকুর!
গত বুধবারে ঘটা এই ঘটনায় রামপুরের বাসিন্দারা আপাতত ‘কুকুর আতঙ্ক’ নিয়ে ভুগছেন৷ জানা গেছে, পাড়াতে কুকুরটি বরাবরই শান্ত-নিরীহ বলে পরিচিত৷ এলাকার অনেকেই তাকে রোজ খাবার খাওয়াতেন, তবে আগে কখনও কুকুরটি এমন আচরণ করেনি৷
ঘটনার দিন খবর পেয়েই কুকুরটিকে ধরতে তৎপর হয় পুরসভা। তার জন্য লোক পাঠানো হয়, তবে কিছুতেই তাকে কব্জা করা যাচ্ছিল না৷ শেষ পর্যন্ত রাতে এলাকায় মাইকে প্রচার করা হয় কুকুরটি ধরা পড়েছে। তাতে মানুষজনের ভয় কাটে।
তবে কুকুরের কামড় খেয়েই দুর্ভোগ মেটেনি। হাসপাতালে গিয়ে মেলেনি অ্যান্টি রেবিস ইঞ্জেকশন। ফলে বহু মানুষকে তা কিনে আনতে হয়েছে। যাঁরা পারেননি তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ৷ তবে যাঁদেরকে কুকুরটি কামড়েছে, তাঁদের শরীরে জ্বলাতঙ্কের জীবাণু ঢুকেছে কিনা তা দেখতে সকলের রক্তপরীক্ষা করা হয়৷
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ‘এলাকারই পরিচিত লালু-কালু যে এমন হিংস্র রূপ নেবে তা কল্পনাতেও ছিল না’। মূলত তার নিশানায় ছিল শিশু এবং বয়স্করা। কয়েকজন তাড়া খেয়ে আশপাশের বাড়িতে ঢুকে কোনও ক্রমে বেঁচেছেন। যাঁরা পালাতে পারেননি তাঁরা ওই কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়েছেন। সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত সংখ্যাটা দাঁড়ায় ২৬। ভয়ে কেউ রাস্তায় বার হতে পারছিলেন না। তবে কতজন যে ‘ডন’ কুকুরের তাড়া খেয়েছেন সে সংখ্যা পুরসভার কাছে পৌঁছায়নি৷ আপাত নিরীহ চারপেয়েও যে মাঝেমাঝে এমন হিংস্র হয়ে ওঠে তা বিলক্ষণ বুঝছে রামপুর৷