ক্ষমতা হাতছাড়া হতেই সংগঠনের বেহাল দশাটা বেরিয়ে পড়েছিল সিপিএমের। ত্রিপুরা রাজ্য সম্মেলন করতে গিয়ে দলের সেই হতশ্রী ছবিটা আরও প্রকট হয়ে উঠল।
ত্রিপুরায় দলের মহকুমা কিংবা জেলা কমিটির সম্মেলন করতেই কালঘাম ছুটে যাচ্ছিল সিপিএম নেতা-কর্মীদের। জেলা কমিটি পর্যন্ত সব সম্মেলনই করতে হয়েছিল ‘গোপনে’। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য সম্মেলন হবে কিনা সেই নিয়ে দলের অন্দরেই ছিল ঘোর সংশয়। সেই সব বাধা-বিপত্তি টপকে অবশেষে দুদিনের সিপিএম রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল ত্রিপুরায়। রবিবার থেকে শুরু করে সম্মেলন চলল সোমবার দুপুর পর্যন্ত।
কিন্তু এই সম্মেলন দেখে অনেকেই বলছেন আট মাসেই জৌলুস হারিয়েছে ত্রিপুরা সিপিএম। কমেছে প্রতিনিধি সংখ্যাও। আগে বাংলা ও কেরল থেকে নেতাদের লাইন পড়ে যেত সম্মেলনে। এবার সেসব ফাঁকা। গতবারও ৫০০ জনের বেশি প্রতিনিধি ছিলেন। এ বার আগরতলা টাউনহলের সম্মেলনে মোট প্রতিনিধি সংখ্যা ৩২২জন। সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়নি সেভাবে। অতীতের সেই জৌলুস, রমরমা হারিয়ে সিপিএমের অবস্থা এখন ভাঙা জমিদারবাড়ির মতোই। সেই ছাপই পড়েছে ত্রিপুরার রাজ্য সম্মেলনে।
বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের পরাজয়ের পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের ছবিই ফুটে উঠেছিল ত্রিপুরাতেও। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পর রাজ্যপাট থেকে বিদায় নেওয়া সিপিএমের বহু নেতা-কর্মী-সমর্থক আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি ঘরছাড়া হন। মার্কসবাদী দল ও গণসংগঠনের কয়েকশো অফিসের সঙ্গে লেনিন-কার্ল মার্কসের মূর্তি ভাঙচুরের কবলে পড়ে। ক্ষমতা বদলের সঙ্গে প্রশাসনের মনোভাবও আমূল পাল্টে যাওয়ায় সংগঠনের বুকে বল জোগানোর মতো অবস্থাও ছিল না নেতাদের। ফলে সংগঠন তো নেতিয়ে পড়েছিলই, সঙ্গে কর্মীরা দল ছাড়ায় পার্টির হালও এখন বেহাল। এই অবস্থায় নমো নমো করে রাজ্য সম্মেলন করে নিজেদের সাইনবোর্ডে কোনওরকমে আলো ফেলল সিপিএম।