বরাবর সাম্প্রদায়িকতার তরীতে ভর করেই ভোট বৈতরণী পার করেছে বিজেপি। ফলে সাম্প্রদায়িকতাই যে গেরুয়া শিবিরের মূল অস্ত্র, তা জানতে আর বাকি নেই আপামর দেশবাসীর। সেই পথ ধরেই আবারও বিধানসভা ভোটের পূর্বে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি মাথা চাড়া দিয়ে উঠল মধ্যপ্রদেশে। সৌজন্যে আবারও বিজেপির হিন্দুত্ববাদী মুখ যোগী আদিত্যনাথ।
ভোপালে বিজেপির ভোটপ্রচারে গিয়ে এক জনসমাবেশে বিরোধী দল কংগ্রেসকে উদ্দেশ্য করে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বললেন, ‘আপনারা আলিকে সঙ্গে রাখুন। আমাদের উতরে দেওয়ার জন্য বজরঙ্গবলীই যথেষ্ট।’ যোগী যে ‘আলি’ বলতে মুসলিমদের বুঝিয়েছেন, তা জলের মতোই স্পষ্ট। রাম তো ছিলই। এবার রামভক্ত হনুমানকেও ভোটের ময়দানে নামিয়ে দিলেন যোগী। ফলে এবারও যে ধর্মীয় রাজনীতিকেই ভোটে অস্ত্র করছে বিজেপি, তা আরও পরিস্কার তাঁর মন্তব্যে।
দিনকয়েক আগেই মধ্যপ্রদেশে ভোট-প্রচারে কংগ্রেস নেতা কমলনাথ মুসলিমদের জোরালো সমর্থন চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘এটা নিশ্চিত করতে হবে, ৯০ শতাংশ মুসলিমের ভোটই যেন যায় কংগ্রেসের পকেটে।’ এরপরই বিজেপি অভিযোগ করে মধ্যপ্রদেশে জেতার জন্য ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করছে কংগ্রেস। কিন্তু কমলনাথের মন্তব্যের বিরোধিতা করার পর এবার জাতপাত আর সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে উস্কে দিলেন খোদ বিজেপি নেতা যোগীই। তিনি বলেন, ‘কমলনাথজীর মন্তব্য আমার চোখে পড়েছে। উনি বলেছেন, শুধু মুসলিমদের ভোট পেলেই ওঁদের চলবে। আমি বলছি, আলিকে সঙ্গে রাখুন আপনারা। আমাদের উতরে দেওয়ার জন্য বজরঙ্গবলীই যথেষ্ট।’
আসলে মধ্যপ্রদেশের মুসলিম ভোট নিজেদের ঘরে তোলা কার্যত অসম্ভব বুঝেই আসন্ন বিধানসভা ভোটে বিজেপির পক্ষে হিন্দু ভোট সংহত করার ‘যজ্ঞে’ মন সঁপে দিলেন দলের হিন্দুত্ববাদী মুখ যোগী। তবে এবার আর একা রামের উপর ভরসা রাখতে পারছে না গেরুয়া শিবির। তাই রামের পাশাপাশি তাঁর ভক্ত হনুমানকেও আসরে নামিয়ে দেওয়া হল। আসলে রাম, বজরঙ্গবলীর মতো হিন্দু দেবতাদের নাম জড়িয়ে দিয়ে মানুষের ধর্মীয় আবেগকেই কাজে লাগাতে চাইছে তারা। কারণ বিজেপি জানে, এবার আর আচ্ছে দিনের মিথ্যে স্বপ্ন দেখিয়ে মানুষকে বোকা বানাতে পারবে না তারা।