অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের শপথ নিচ্ছে শিবসেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। ঠিক এই সময়েই মন্দির নিয়ে মোদী সরকারকে চরমপত্র ধরিয়ে দিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। সুপ্রিম কোর্টকেও দিয়ে রাখলেন পরোক্ষ হুমকি। রবিবার নাগপুরে সঙ্ঘের সদর দপ্তর থেকে ভাগবত হুঙ্কার ছাড়লেন, ‘আর ধৈর্য নয়। রাম মন্দির নির্মাণ যদি বিচার ব্যবস্থার কাছে কোনও অগ্রাধিকারের বিষয় না হয়, তা হলে দেরি না করে মন্দির বানাতে এ বার আইন আনতে হবে।’
রবি সকাল থেকেই তেতে পুড়ে আছে অয্যোধ্যা। লক্ষ সাধু-সন্ত নিয়ে দুদিন ধরে ‘ধর্ম সংসদ’-এর আয়োজন করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তারা জানিয়েছে, রবিবার অযোধ্যায় তাদের ওই ‘ধর্মসভা’ হল ‘যুদ্ধের আগে শেষ দামামা।’ এর পরে সরাসরি মন্দির নির্মাণই লক্ষ্য। দলবল নিয়ে অযোধ্যায় এসেছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে ও আদিত্য ঠাকরেও। তারাও হাত মিলিয়েছে ভিএইচপি-র সঙ্গে। একসঙ্গে রাম মন্দির নির্মাণের শপথ নিচ্ছে দু’দল। এমন চাপের মুখে পড়ে রবি-সকালেই রাম মন্দির নিয়ে মুখ নিয়ে খুলেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। তিনি অবশ্য কৌশলে এর দায় কংগ্রেসের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আদালতে বাধা দিচ্ছেন কংগ্রেসের আইনজীবীরা’।
কিন্তু গেরুয়া শিবিরের আর কোনও যুক্তি শুনতে নারাজ সঙ্ঘ প্রধান। প্রধানমন্ত্রীর বয়ানের রেশ কাটার আগেই রবিবার দুপুরে নাগপুরের সভা থেকে মোহন ভাগবত হুঙ্কার দিলেন, ‘অযোধ্যা মামলা বহুদিন ধরে আদালতে ঝুলে রয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টিকে অগ্রাধিকারই দিচ্ছে না! অথচ রায় দিতে দেরি করা মানেই অবিচার করা। তাই এবার অধ্যাদেশ চাওয়ার সময় চলে এসেছে। জনগণও চান শীঘ্রই রাম মন্দির নির্মান হোক। এই আন্দোলন এখন চরম পরিণতির দিকে এগোচ্ছে। যেভাবেই হোক আমাদের মন্দির তৈরি করতে হবে। সরকার আইন আনুক। কীভাবে, সেটা ওরা ভাবুক। আমাদের রাম মন্দির চাই।’
এদিকে সভা শেষ হওয়ার পর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে জানানো হয়েছে, রাম মন্দির নির্মাণের দিন খুব শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে।’ ঘটনা দেখে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, গত পাঁচ বছরে বিশেষ কিছু করে উঠতে পারেনি মোদী সরকার, যা দিয়ে বিজেপি আবার ভোট চাঈটে পারে। তাই গেরুয়া শিবিরকে ভোট বৈতরণী পার করাতেই আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং শিবসেনা একসঙ্গে নিজেদের মধ্যে তালমিল করে রাম মন্দির নির্মানের জিগির তুলেছে।
এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কে দিন কাটছে অযোধ্যাবাসীর। তাঁদের একটাই ভয়, আবার না ফিরে আসে ৯২-এর সেই কালো দিন।