মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই এবার স্বপ্নপূরণ হল আপামর মুর্শিদাবাদবাসীর। অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় পেতে চলেছে মুর্শিদাবাদ। ইতিমধ্যে বিধানসভায় এ বিষয়ে বিলও পাস হয়ে গেছে।
গত ১’লা অক্টোবর কলকাতা গেজেটে দ্য মুর্শিদাবাদ ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই বলা হয়েছে, কৃষ্ণনাথ কলেজেই হবে মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়। এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে বহরমপুর পেয়েছে মেডিক্যাল কলেজ। আর এবার এই বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই খুশি সীমান্ত জেলার মানুষ।
এই মুহূর্তে মুর্শিদাবাদে ২২টি কলেজ রয়েছে। এক সময় সেসব ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। কিন্তু পরে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আসে। ফলে জেলার পড়ুয়াদের মোটা টাকা ঘর ভাড়া দিয়ে থাকতে হত। এবার জেলার সব কলেজ চলে আসবে মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায়। এতে উচ্ছ্বসিত ছাত্রছাত্রীরাও।
একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দরকার ২০ থেকে ২২ একর জমি। কৃষ্ণনাথ কলেজ প্রায় ২০ একর জমির ওপর। সেখানে ৫টি ছাত্রাবাসও আছে। শহরের গোরাবাজারে ভাগীরথী নদীর পাড়ে ছাত্রাবাস ছাড়াও রয়েছে বিশাল মাঠ।
কলেজের অধ্যক্ষ সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা খুব খুশি। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে। আরও খুশি কৃষ্ণনাথ কলেজকেই এই কাজে বেছে নেওয়ার জন্য। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের কলেজে ইদানীং বেশ কিছু বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়ানো হত। তবে এবার পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হল |
১৮৫৩ সালে তৈরি হওয়া কৃষ্ণনাথ কলেজ অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অনুকরণে তৈরি। গথিক স্থাপত্যের কাজ রয়েছে। ভাগীরথী নদীর পাড়ে থাকা এ কলেজ জেলার নয়, রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন ও গর্বের কলেজ।
প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন কাশিমবাজারের রাজা কৃষ্ণনাথ রায়। সেই মতো উইলও করেছিলেন তিনি। কিন্তু ১৮৪৪ সালে হঠাতই আত্মঘাতী হন কৃষ্ণনাথ। তাঁর উইলও বাতিল হয় আদালতের রায়ে। পরে কৃষ্ণনাথের নামে কলেজ হয়। অবশেষে প্রায় পৌনে দুশো বছর পর মৃত রাজার স্বপ্নপূরণ হলো।