রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কল্যানে বাংলা এখন মাও-মুক্ত। মাও দমনে বরাবরই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। এবার ভিনরাজ্য থেকে আসা মাওবাদীদের গতিবিধির খবর পেতে জঙ্গলমহলের সর্বত্র বসছে সিসিটিভি। এমনই উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। যাতে মাওবাদী কার্যকলাপ কিংবা তাদের কোনও বৈঠকের খবর সহজেই জানা যায়।
এক্ষেত্রে মূলত বাজার এলাকা ও প্রত্যন্ত গ্রামগুলিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। নবান্ন সূত্রে খবর, কীভাবে এই পরিকল্পনা কার্যকর করা যাবে কিংবা কোথায় কোথায় ওই ক্যামেরা বসানো হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে পুলিশ।
কয়েকদিন আগেই গোয়ালতোড় থেকে ৩ মাওবাদীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে মাওবাদ বিষয়ক বিভিন্ন পুস্তিকা ও লিফলেট উদ্ধার হয়। কীভাবে ভিনরাজ্যে পালিয়ে যাওয়া মাওবাদীরা ফের জঙ্গলমহলে ঘাঁটি গাড়তে চাইছে, তাও জানা যায় ধৃতদের কাছ থেকে। এরপরই রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর নামে পোস্টার মেলে জঙ্গলমহলে। ফলে তৎপর হয়ে উঠেছে প্রশাসন।
বর্তমানে ঝাড়খণ্ড সীমান্তে মাওবাদীদের বৈঠকের খবর মাঝেমধ্যে আসছে পুলিশের কাছে। এরাজ্যে সংগঠনকে সাজানোর পাশাপাশি কীভাবে অপারেশন চালানো হবে, তা নিয়ে তারা বৈঠক করছে বলেই খবর। পাশাপাশি, নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলও চাইছে জঙ্গলমহলে অশান্তি ছড়াতে। তারা ওই মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলেই একাংশের দাবি। কারণ তাদেরও লক্ষ্য রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজগুলিতে ব্যাঘাত দেওয়া।
এসব কারণেই রাজ্য সরকার জঙ্গলমহলে নজরদারি বাড়াতে চাইছে। রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জঙ্গলমহলের থানাগুলিতে ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এক সময়ে মাওবাদীদের মুক্তাঞ্চল বলে পরিচিত থানাগুলির হাল ফিরেছে। কিন্তু এলাকায় সম্প্রতি বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়েছে। যাদের সঙ্গে মাওবাদী সংগঠনের নেতাদের যোগাযোগ রয়েছে। ফলে সেই কারণেই পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামের যে সব জায়গায় মাওবাদীরা আবার যাতায়াত শুরু করেছে বলে খবর আসছে, সেখানে নজরদারি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, লোকসভা ভোটের আগেই এই কাজ সেরে ফেলতে চায় তারা। শীঘ্রই প্রায় ৫০টির মতো ক্যামেরা কেনা হবে। এবং অদূর ভবিষ্যতে ধীরে ধীরে এর সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। পাশাপাশি, ওই ক্যামেরাগুলি দিয়ে যাতে ২৪ ঘণ্টাই মনিটরিং করা যায়, তারজন্য উপযুক্ত পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।