বিরোধী এবং সুপ্রিম কোর্টের জোড়া চাপের কাছে রাফাল যুদ্ধবিমান ইস্যুতে মাথা নত করতে বাধ্য হল মোদী সরকার। শেষ পর্যন্ত রাফালে যুদ্ধবিমানের দাম জানাল কেন্দ্র।
দীর্ঘ টালবাহানার পর সোমবার দুপুরে দেশের শীর্ষ আদালতে মুখবন্ধ খামে যুদ্ধবিমানের দাম সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করেছে কেন্দ্র। পাশাপাশি জানিয়েছে, রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তিতে কোনও অনিয়ম হয়নি। ২০১৩ সালে ইউপিএ আমলে যে নিয়ম তৈরি হয়েছিল, তা অনুসরণ করেই ফ্রান্স থেকে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি হয়েছে। ধাপে ধাপে কীভাবে যুদ্ধবিমান কেনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ৯ পাতার মূল রিপোর্ট-সহ মোট ১৬ পাতার সাফাইয়ে তা জানিয়েছে মোদি সরকার। অফসেট পার্টনার হিসেবে রিলায়েন্সের বরাত পাওয়ার বিষয়টিতেও সরকারের বিন্দুমাত্র কোনও ভূমিকা নেই বলেই লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, ডিফেন্স অফসেট গাইডলাইন মোতাবেক ‘অরিজিনাল ইক্যুপমেন্ট ম্যানুফাকচার’-এর ক্ষেত্রে ভারতের কোন কোম্পানিকে নির্বাচিত করা হবে, তা সম্পূর্ণ বিদেশি কোম্পানির ব্যাপার। এতে সরকারের কোনও ভূমিকা নেই।
সরকারের পক্ষে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল গত ৩১ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টে বলেছিলেন, দামের বিষয়টি গোপনীয়। সংসদেও প্রকাশ হয়নি। তাই সিক্রেসি আইন মেনে তা বলা যাবে না। যদিও এরপরেও প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেছিলেন, গোপনীতার আইন লঙ্ঘন না হলে প্রয়োজনে মুখবন্ধ খামেও দিতে পারেন। একইসঙ্গে প্রধান বিচারপতির নির্দেশ ছিল, যদি একান্ত তা দিতে না পারেন, তাহলে কেন দাম জানাতে পারছেন না তা হলফনামা দিয়ে জানান। এরপরেই মুখবন্ধ খামে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়ে দেয়, ফ্রান্সের থেকে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কত দামে কেনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার জন্য ২০১৬ সালে ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই ৩৬টি বিমানের জন্য ভারতকে খরচ করতে হচ্ছে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা। ২০১৯-এর সেপ্টেম্বর থেকে ফ্রান্সের কাছ থেকে এই বিমান পেতে শুরু করবে ভারত। ২০২২-এ সবক’টি বিমান দেওয়ার কাজ শেষ হবে।