এবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পালা? কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার ও তাঁর দল বিজেপিকে এভাবেই কটাক্ষে বিঁধলেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। নোট বাতিলের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে বিধান ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মোদি সরকারকে বস্তুত ধাপ্পাবাজ বলেও দাবি করেন তিনি। এই দাবির স্বপক্ষে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া তথ্যকেই কাজে লাগালেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা।
নোট বাতিলের বর্ষপূর্তিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক বিতর্ককে অস্ত্র করে মোদির বিরুদ্ধ সুর চড়িয়েছেন চিদম্বরম। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার চলতি আর্থিক ঘাটতি মেটাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দিকে হাত বাড়িয়েছে। কেননা, লোকসভা নির্বাচনের মুখে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী’। এদিকে, বাজেট নির্ধারিত প্রত্যক্ষ কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রায় বিশাল ঘাটতি রয়েছে। জিএসটি বাবদ সংগ্রহ আশানুরূপ হয়নি। ২০১৮-’১৯ সালে প্রায় ৩.৩ শতাংশ আর্থিক ঘাটতি মেটানোর সব রাস্তা প্রায় বন্ধ। তাই মোদি সরকার দিশাহারা। বেপরোয়া হয়ে তিনি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দিকে হাত বাড়িয়েছেন। ব্যাঙ্কের গচ্ছিত এক লাখ কোটি টাকায় নজর পড়েছে এনডিএ সরকারের। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর তাতে বাধা দেওয়ায় আরবিআই আইনের সাত নম্বর ধারা প্রয়োগ করে গভর্নরকে সরকারের আবদার পূরণে বাধ্য করতে চাইছে।
চিদম্বরমের মতে, ‘এটা বেনজির ঘটনা। ওই আইনের বলে গভর্নরকে এক লক্ষ কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে ঢালতে বাধ্য করা হচ্ছে’। এই অবস্থায় গভর্নরের কাছে দুটি পথ খোলা রয়েছে। হয় তাঁকে সরকারের দাবি মেনে টাকা দিয়ে দিতে হবে, নয়তো ইস্তফা দিতে হবে। চিদম্বরম মনে করেন, যে পদক্ষেপই গভর্নর নিন না কেন, তাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হবে। যেভাবে সিবিআইকে নিজেদের তাঁবে রাখতে গিয়ে এই সংস্থার গুরুত্ব নষ্ট হচ্ছে, সেভাবেই এবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দখল নিতে তৎপর হয়েছে মোদি সরকার। আগামী ১৯ তারিখ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছে। চিদম্বরমের আশঙ্কা, বর্তমান বোর্ডে বিজেপি’র তাঁবেদার সদস্যদের দিয়ে চাপ তৈরি করে নিজেদের কার্যসিদ্ধি করবে বিজেপি, যা দেশের পক্ষে ভয়াবহ হবে।