শেক্সপিয়ার বলেছিলেন, ‘নামে কী আসে যায়!’, কিন্তু মোদী জমানায় দেশে ‘রাম’ ও ‘নাম’ দুটোই খুব বড় ইস্যু। আবার, বিরোধী দলগুলি এবং দেশবাসীর কাছে, খোদ মোদীরও বিশেষ ‘সু-নাম’ রয়েছে। তাই দেশে এখন নাম বদলের জোর হিড়িক। সেই পথ ধরেই এবার আমেদাবাদের নাম হতে চলেছে কর্ণাবতী!
উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার জানিয়েছিল কুম্ভ মেলার আগেই বদলে যাবে এলাহাবাদের নাম। সেই ঘোষণা মতো দিন কয়েক আগেই এলাহাবাদ জেলার নাম হয়েছে প্রয়াগরাজ।পাশাপাশি যোগী জানিয়েছিলেন, ফৈজাবাদ জেলার নামও পাল্টে হবে অযোধ্যা। এমনকি অযোধ্যা বিমানবন্দরের নামও রাখা হবে রামের নামেই।
এবার যোগীর রাজ্যের হাওয়া উঠল মোদীর রাজ্যেও। আইনি গেরো না থাকলে শীঘ্রই আমেদাবাদের নাম বদলে হবে কর্ণাবতী। রাজ্যের বিজেপি সরকার জোরকদমে সেই চেষ্টাই চালাচ্ছে। এ কথা জানালেন খোদ গুজরাটের উপমুখ্যমন্ত্রী নীতিন প্যাটেল।
বেশ কয়েকদিন ধরেই কানাঘুষো চলছিল। অবশেষে গান্ধীনগরে উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ চায় আমেদাবাদের নাম বদলে কর্ণাবতী রাখা হোক। আইনি জটিলতা কাটিয়ে উঠতে মানুষের সহযোগিতা পেলে আমরা শহরের নাম বদলের জন্য সব সময় প্রস্তুত।’
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, একাদশ শতকে আমেদাবাদের নাম ছিল আশাবল। আনহিলওয়ারার (অধুনা পাটান) চালুক্য শাসক কর্ণ, যুদ্ধে হারান আশাবলের ভিল রাজাকে। সবরমতী নদীর তীরে গড়ে তোলেন কর্ণাবতী। ১৪১১ খ্রিস্টাব্দে সুলতান আহমেদ শাহ কর্ণাবতী শহরের কাছে নতুন প্রাচীর শহর গড়ে তোলেন। পরে জায়গাটির নাম হয় আমেদাবাদ।
দেশের শহরগুলির মধ্যে একমাত্র আমেদাবাদেরই রয়েছে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ তকমা। রাজ্য সরকার সেই শহরের নামও বদলাতে চায়। ফলে ইতিমধ্যেই আসরে নেমে পড়েছে বিরোধীরা। নাম বদল ইস্যুতে বিজেপি সরকারকে তুলোধোনা করতে শুরু করে দিয়েছে প্রায় সমস্ত বিজেপি বিরোধী দলগুলিই।
কংগ্রেস রাজ্য শাখার মুখপাত্র মণীশ দোশি বলেন, ‘আমেদাবাদের নাম বদল বিজেপি-র নির্বাচনী গিমিক। যে করেই হোক হিন্দু ভোট নিশ্চিত করতে চায় বিজেপি। এক্ষেত্রে আমেদাবাদের নাম বদল, অযোধ্যায় রামমন্দির ইস্যু ওদের ভোটের হাতিয়ার।’