‘প্রথম থেকেই বলেছি, নোটবন্দী একটা বিপর্যয়। অর্থনীতিবিদ, বিশেষজ্ঞরাও এখন তাই বলছেন।দেশের জন্য এটা একটা ‘কালো দিন’। বিমুদ্রাকরনের নামে কেন্দ্রীয় সরকার দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে নোটবন্দী। এই দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে পারে দেশবাসী’। নোটবন্দীর দ্বিতীয়বর্ষ পূর্তিতে এভাবেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের আজকের দিনে অর্থাৎ ৮ নভেম্বর রাত আটটায় দেশবাসীর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ৫৫ মিনিটের ভাষণে তোলপাড় পড়ে যায়। ১০০০ ও ৫০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায় কেন্দ্র। এটিএম এবং ব্যাঙ্কেও বসে নিয়ন্ত্রণ। মোদী প্রতিশ্রুতি দেন, ৫০ দিনের মধ্যে কালোটাকা মুক্ত হবে অর্থনীতি। বহু ভোগান্তি, হয়রানি পোহান দেশবাসী। কিন্তু হাতে কী এল? প্রাপ্তির ভাঁড়ার এখনও শূন্য। উল্টে আরবিআই-এর বার্ষিক রিপোর্ট জানাচ্ছে, কালো টাকা নষ্টের বদলে ব্যাঙ্কেই ফেরত এসেছে। ২ বছর পরেও নোট-বন্দী নিয়ে লাভ-ক্ষতির হিসাব কষছে মোদী সরকার।
মোদীর নোটবন্দী ঘোষণার পরেই গর্জে উঠেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল অন্যান্য বিরোধী দলগুলিও। বিমুদ্রাকরনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে শুরু হয় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। সেই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন মমতা। সেই সময়েই নোটবন্দীকে জাতীয় বিপর্যয় আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। তারপর বিশেষজ্ঞরাও সেই দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কও জানায়, লাভের লাভ কিছু হয়নি। বাতির টাকার বড় অংশ ব্যাঙ্কে ফিরে এসেছে। আজ ৮ নভেম্বর মোদী সরকারের নোটবন্দীর দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি। দুবছর পরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষা ও সুর একই রয়েছে। কেন্দ্র বিরোধিতায় সর্বাগ্রে তিনি।
দফায় দফায় টুইট করে কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ছুঁড়ে দিয়েছেন প্রশ্নবান। টুইট করে আজকের দিনকে ‘কালা দিন’ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন তিনি। কৃষক, মজুর, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর হয়ে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘কালো টাকা ফিরিয়ে আনার যে প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রী দিয়েছিলেন তাতে ডাহা ফেল করেছেন তিনি। এখনও ব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত ১০০ টাকার নোট আসেনি। আমার দরিদ্র ভাই-বোনেরা কীভাবে তাঁদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনবে’?