তবে কি বিদায় ঘন্টা বেজেই গেল বিজেপির? প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরেই। গতকালই বেরিয়েছে কর্ণাটক উপনির্বাচনের ফলাফল। সেখানে বিজেপি ও তাদের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী রেড্ডি ভাইদের দুর্গে ধস নামিয়ে বেল্লারি লোকসভা আসন ছিনিয়ে নিল কংগ্রেস–জেডিএস জোট।
২০০৪ সালের পর এই প্রথম বেল্লারি হাতছাড়া হল বিজেপি–র। এই কেন্দ্রে জোট প্রার্থী কংগ্রেসের ভি এস উগ্রাপ্পা জয়ী হয়েছেন ২ লক্ষ ৪৩ হাজার ১৬১ ভোটে। তিনি হারিয়েছেন বিজেপি নেতা শ্রীরামুলুর বোন জি শান্তাকে। এটা বেল্লারিতে জয়ের রেকর্ড। নিজেদের দুর্গে রেড্ডি ভাইদের এই পরাজয়ে অশনি সঙ্কেত দেখছে বিজেপি।
‘দীপাবলির দিন অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরলেন বেল্লারির মানুষ’। ভোটগণনার প্রথম ৫ ঘণ্টায় কংগ্রেস–জেডিএস জোটপ্রার্থী ২ লক্ষেরও বেশি ভোটে এগিয়ে যাওয়ায় টুইটারে লিখেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। সত্যিই যেন অন্ধকার থেকে এ এক আলোয় উত্তরণ।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গতকাল দুপুরে ভোটের ফল স্পষ্ট হতেই রেড্ডি–পরিবারের কোনও বিজেপি নেতা বাড়ি থেকে বেরোননি। আসলে প্রায় ১৪ বছর পর নিজেদের দুর্গে ধস নামার ইঙ্গিত মিলতেই তাঁরা লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গেছেন। একই ভাবে রাজ্য বিজেপি–র সদর দফতরও ছিল প্রায় অন্ধকারাচ্ছন্ন।
ইয়েদুরাপ্পা সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী জনার্দন রেড্ডি এবং তাঁর ভাই সোমশেখর রেড্ডি হলেন বেল্লারির অঘোষিত ‘বেতাজ বাদশা’। তাঁদের দুজনকেই একইসঙ্গে বলা হয় রেড্ডি ব্রাদার্স। প্রসঙ্গত, ভারতের ধনী রাজনীতিকদের তালিকায় জনার্দন এক সময় ছিলেন পয়লা নম্বরে।
এহেন কয়েকশো কোটি টাকার মালিক তথা ব্যবসায়ী জড়িয়ে পড়েছিলেন বেল্লারির খনিতে অবৈধ খনন–কাণ্ডে। মামলা যায় সিবিআইয়ের হাতে। এরপর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা গ্রেফতার করে জনার্দনকে। ৪২ মাস তিনি কাটিয়েছেন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে। বেলেকেরি বন্দর দুর্নীতিতেও জড়িয়েছে জনার্দনের নাম।
কর্ণাটকে বিধানসভা ভোটের কিছু দিন আগে পর্যন্ত রেড্ডি ভাইদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছিল বিজেপি। তবে বিধানসভা ভোটে ফের বিজেপি ভরসা করে রেড্ডি ভাইদের ওপর। তবে এবার আর শেষরক্ষা হল না। রেড্ডি ভাইয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বেল্লারি হাতছাড়া হতেই চরম অশনি সঙ্কেত গোটা বিজেপি শিবিরে। জেডিএসের শীর্ষনেতা দেবগৌড়া জানান, বেল্লারিতে জোটের জয় এই রাজ্যে বিজেপি–র পতনের শুরু।