ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যের পর্যটনকে পাখির চোখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে ঢেলে সাজাতে, নিয়েছেন বিশেষ উদ্যোগ। পর্যটক টানতে এবার ঢেলে সাজছে হলদিয়া।
হলদি ও হুগলি নদীর মোহনায় কেরলের হাউসবোটের আদলে তৈরি কোটি টাকার সুসজ্জিত প্রমোদতরী ভাসাবে হলদিয়া পুরসভা। বিশেষ ধরনের ফাইবার দিয়ে তৈরি এই বোটে চেপে ভ্রমণবিলাসীরা এবার হলদি ও হুগলি নদীর মোহনায় অসাধারণ সূর্যাস্ত, বন্দরমুখী জাহাজ বা নয়াচর দ্বীপের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের সৌন্দর্য দেখার সুযোগ পাবেন।
শীত, গ্রীষ্ম ও বর্ষা, সব মরশুমে নদীতে ভাসানোর উপযোগী এই বোটের ভাড়া হবে মধ্যবিত্তের নাগালেই। পাশাপাশি, বোটে ছোট একটি রেঁস্তোরা ও পর্যটকদের বিনোদনের ব্যবস্থাও থাকবে।
সম্প্রতি পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে কর্তৃপক্ষ শহর সংলগ্ন নদী-পর্যটন প্রসারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার আদক বলেন, হলদিয়ার পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি এবার আমরা নদী-পর্যটনে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি।
জানা গেছে, এক কোটি টাকা খরচ করে ২৮ আসনের একটি বড়মাপের ফাইবার রিইনফোর্সড প্লাস্টিক (এফআরপি) বোট কিনবে পুরসভা। দেশের মধ্যে শুধু মুম্বইয়ের একটি সংস্থাই বিশেষ ধরনের এই বোট তৈরি করে। ওই সংস্থার সঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়েছে।
শ্যামল বাবু আরও বলেন যে, ওই বোট অগভীর ও গভীর দুই ধরনের নদীপথেই চলাচল করতে সক্ষম। তাছাড়া প্লাস্টিকের তৈরি হওয়ায় নদীতে দ্রুত চলতে পারবে। এছাড়া পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করতে আমরা এই বোটকে কেরলের হাউসবোটের আদল দেওয়ার চেষ্টা করছি।
প্রসঙ্গত, গত ২ মে জাপানের কনসাল জেনারেল মাসাইউকি তাগা হলদিয়া পুরসভায় এসে হলদি নদীতে লঞ্চে ভ্রমণ করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হন। হলদিয়ায় নদীবক্ষে ভ্রমণকে গুরুত্ব দিয়ে পর্যটন পরিকল্পনা করার জন্য সেইসময় পুর চেয়ারম্যানকে পরামর্শ দেন জাপানি কনসাল। তারপরই এ ব্যাপারে উৎসাহিত হয় পুরসভা।
পুরসভার চেয়ারম্যান-ইন কাউন্সিলের সদস্য সত্যব্রত দাস বলেন, নদীবক্ষে এফআরপি ট্যুরিস্ট বোট চালানোর আগে সংস্থার লোকজন ও নদী বিশেষজ্ঞরা এসে সমীক্ষা করবেন। নদীর নাব্যতা অনুযায়ী তাঁরা এই বোট তৈরি করবেন। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করতে চায় পুরসভা।