‘আমিই সত্যিকারের পাহারাদার। সততার সঙ্গে অচ্ছে দিন আনতে হবে, দেশে এখন ঘোর কালো দিন চলছে।’ জলপাইগুড়ির গরুমারার কাছে টিয়াবনে সরকারি পরিষেবা প্রদানের মঞ্চ থেকে নাম-না-করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্দেশ্য করে এমনই তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরসি প্রসঙ্গে এদিনও বিজেপি–র প্রতি আক্রমণ শানান তিনি। তাঁর সরাসরি আহ্বান, ‘আমি ভাঙা নয়, জোড়ার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। অচ্ছে দিন কাউকে মেরে ভাগাতে বলে না। বাংলায় এ জিনিস হবে না। এখানে আমরা শান্তি রাখব।’
নির্বাচনের আগে বিজেপি–র নেতারা ডানকান গোষ্ঠীর রুগ্ণ বাগানগুলো অধিগ্রহণের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিজেপি–কে আক্রমণ করতে গিয়ে এদিন সেটাকেই হাতিয়ার করেন মুখ্যমন্ত্রী। উপস্থিত জনতাকে মমতা বলেন, ‘মিথ্যে বলে ভোট নিয়েছিল বিজেপি। অথচ রাজ্য সরকার একের পর এক বন্ধ বাগান খুলছে। যে দু-একটি বাগান বন্ধ আছে, শ্রম দপ্তর দেখছে, তা–ও খুলে যাবে’। চা-বাগানের জন্য তৃণমূল সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের ভাতা বাড়িয়ে ১৫০০ টাকা করা হয়েছে, চা-শ্রমিকদের মজুরি ৬৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৭৯ টাকা করা হয়েছে’। মমতা বলেন, ‘আলিপুরদুয়ার-কোচবিহারের অনেকে ব্যবসা বা অন্য কারণে আসামে থাকেন, অথচ আসামে বাঙালি খেদাও চলছে। ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন ভয়ে ভয়ে আসামে যেতে হয়। এর জন্য আসামবাসীর কোনও দোষ নেই। এটা রাজনৈতিক দোষ। অসমের মানুষও আমার ভাইবোন, বাংলায় এসব হয় না। দেশের সব জায়গায় সব মানুষ থাকতে পারে। আগে এমন ভাগাভাগি হয়নি, এখন হচ্ছে। কোথাও জায়গা না থাকলে বাংলা সবাইকে আশ্রয় দেবে’। বেকারত্ব প্রসঙ্গেও কেন্দ্রকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সারা দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে অথচ রাজ্যে ৪০ লক্ষ বেকার কমেছে। ১২ লক্ষ বেকার যুবক যুবতীকে স্কিল ডেভেলপমেন্টের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে’। অশান্ত দার্জিলিঙ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দার্জিলিঙের অশান্তিতে কেন্দ্র মদত দিয়েছে’। তাঁর প্রশ্ন, ‘পাহাড়ে অশান্তি হলে জলপাইগুড়ি ভাল থাকবে কী করে? তবে রাজ্য পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়েছে। পাহাড় এখন পুরোপুরি শান্ত’।