#MeToo তে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সিইও রাহুল জোহরি-র নাম ওঠায় সোচ্চার হলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এই নিয়ে বিসিসিআই-কে কড়া চিঠি দিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা সিএবি সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী।
ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (সিএবি)-র তরফে সৌরভের লেখা চিঠিতে ‘জাতীয় ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তিত তাঁরা”। সৌরভ লিখেছেন, “অভিযোগের সত্যতা প্রসঙ্গে আমি এখনও নিশ্চিত নই, কিন্তু ওই ঘটনা খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া আমায় আরও চিন্তায় ফেলেছে। কমিটির সদস্যরাই নিজেদের মধ্যে দু’ভাগ হয়ে গিয়েছেন। মরসুমের মাঝামাঝি বদলে ফেলা হচ্ছে নিয়ম, যা আগে কখনও হয়নি”।
ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন, শঙ্কিত এবং যারপরনাই ক্ষুব্ধ সৌরভ গাঙ্গুলি তাই চিঠি লিখলেন বিসিসিআই–এর কার্যকরী সভাপতি সি কে খান্না, সচিব অমিতাভ চৌধুরি ও কোষাধ্যক্ষ অনিরুদ্ধ চৌধুরিকে। তিনি লিখেছেন –
ভারতের ক্রিকেট প্রশাসন কোন দিকে যাচ্ছে, তা নিয়ে অত্যন্ত আশঙ্কায় আমি এই চিঠি লিখছি। দীর্ঘদিন ক্রিকেট খেলেছি। আমাদের জীবন চালিত হত জেতা–হারার মধ্যে দিয়ে। ভারতীয় ক্রিকেটের ভাবমূর্তিই আমাদের কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখনও আমরা ঘুম থেকে উঠে ভাবি আমাদের ক্রিকেটীয় ভাবমূর্তি কতটা স্বচ্ছ থাকল।
কিন্তু গভীর উদ্বেগের (আমি উদ্বেগ শব্দটাই ব্যবহার করলাম) সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, গত দু’বছরে যা হয়েছে, তাতে বিশ্বে ভারতীয় ক্রিকেটের যে কর্তৃত্ব এবং কোটি কোটি সমর্থকের ভালবাসা এবং বিশ্বাস এখন তলানিতে পৌঁছচ্ছে।
জানি না এটা কতটা সত্যি, কিন্তু সম্প্রতি হেনস্থার যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বিসিসিআই–কে অত্যন্ত মুখ চুন দেখাচ্ছে, বিশেষ করে যেভাবে গোটা ব্যাপারটা দেখা হয়েছে। সিওএ এখন চার সদস্য থেকে দুই সদস্যে এসে দাঁড়িয়েছে। এবং দু’জনের মধ্যে মতের মিল নেই। মরশুমের মাঝখানে ক্রিকেটের নিয়ম বদলানো হচ্ছে। আগে এরকম কখনও শুনিনি। কমিটির সিদ্ধান্তগুলো অত্যন্ত অপমানজনক ভাবে সম্পূর্ণ ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোচ নির্বাচন নিয়ে আমার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছে (যত কম বলা যায়, তত ভাল)। বোর্ডের কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত আমার পরিচিত একজন আমাকে জিজ্ঞেস করছিল, দরকার পড়লে তারা কার কাছে যাবে। আমি কোনও উত্তর দিতে পারিনি। উল্টে আমাকে জিজ্ঞেস করতে হয়েছিল, আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করার সময় কোনও সংস্থা থেকে বোর্ডের কাউকে আমন্ত্রণ জানাতে গেলে, কাকে বলব। আমি জানিই না ওখানে কী চলছে।
বছরের পর বছর দুর্ধর্ষ প্রশাসকদের নিরলস পরিশ্রম এবং অসাধারণ ক্রিকেটারদের জন্যই ভারতীয় ক্রিকেটের বিপুল জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছে। এঁদের জন্যই মাঠে হাজার হাজার সমর্থক আসেন।
এই মুহূর্তে আমার মনে হচ্ছে, ভারতীয় ক্রিকেট সঙ্কটে।
আশা করছি, সবাই শুনতে পাচ্ছেন।
বিনীত
সৌরভ গাঙ্গুলি
(প্রেসিডেন্ট, সিএবি)