আবারও বড়সড় ধাক্কা খেল মোদী সরকার এবং তাদের বিদেশনীতি। একইসঙ্গে মুখ পুড়ল দেশেরও। আগামী প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হওয়ার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত বছরের জুনে যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ট্রাম্পকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান। ওই আমন্ত্রণের কথা স্মরণ করিয়ে চলতি বছরের এপ্রিলে ট্রাম্পের কাছে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি হওয়ার আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জুলাইয়ে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, তাঁরা আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন। জবাব দেওয়ার সময় কিছুটা দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। কিন্তু কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে তখনই জানিয়ে দেন সারা। প্রেসিডেন্টের যাওয়ার প্রশ্নে এখনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। সেপ্টেম্বরে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র টু প্লাস টু ডায়ালগের ফলাফলের ওপর বিষয়টি নির্ভর করবে বলেও তিনি মন্তব্য করেছিলেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মার্কিন অফিসাররা বলে আসছিলেন, এবছর শীতে স্টেট অফ ইউনিয়নের সম্মেলনের জন্য প্রেসিডেন্টের আগামী জানুয়ারি মাসে ভারতে না যাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। অবশেষে সপ্তাহান্তে হোয়াইট হাউসের তরফে দিল্লিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে আসছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এব্যাপারে ভারতে মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের সফরসূচি নিয়ে কথা বলার অধিকার একমাত্র হোয়াইট হাউসেরই আছে। কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রক থেকে অবশ্য এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অত্যন্ত খারাপ বিষয়। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশ নীতির পক্ষেও এটা বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা। সূত্রের খবর, ইরানের কাছ থেকে তেল ও রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র কেনায় দিল্লির প্রতি ক্ষুব্ধ ওয়াশিংটন।
মোদি যদিও দেশবাসীর কাছে বরাবরই দাবি করে এসেছেন যে, তাঁর সঙ্গে বিশ্বের তামাম রাষ্ট্রনায়কদের সম্পর্ক অত্যন্ত মজবুত এবং বন্ধুত্বপূর্ণ। ইরানের উপর আমেরিকা একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপানো সত্ত্বেও ভারত ইরান থেকে তেল কেনার সিদ্ধান্ত বদলাননি তিনি। ভারতের এই পদক্ষেপকে মোটেও ভালো চোখে দেখেননি ট্রাম্প।
পাশাপাশি, রাশিয়া থেকে এস–৪০০ বেশি দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র কেনার মোদি সরকারের সিদ্ধান্তেও রীতিমতো ক্ষুব্ধ ট্রাম্প। সেকারণেই ভারতকে চাপে রাখতে আমেরিকা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
ট্রাম্প আমন্ত্রণ বাতিল করায় ভারতের মোদি সরকারকে এখন নতুন কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানাতে হবে। ট্রাম্পের বাতিল করা আবেদন আর কোনো রাষ্ট্রপ্রধান নেবেন কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।