পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের মুখে প্রকাশিত নতুন বইয়ে মোক্ষম বোমা ফাটালেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। সদ্য প্রকাশিত ‘দ্য প্যারাডক্সিক্যাল প্রাইম মিনিস্টার, নরেন্দ্র মোদী অ্যান্ড হিজ ইন্ডিয়া’ গ্রন্থে তিনি সাফ লিখেছেন, ‘আসলে মোদী যা বলেন তা করেন না। এক দিকে নরেন্দ্র মোদী বলেন, সংবিধান নাকি তাঁর কাছে পবিত্র গ্রন্থ। অথচ বাস্তবে গাঁধী-নেহরু-অম্বেডকরের তিল তিল করে গড়ে তোলা সাংবিধানিক সংস্থাগুলি গত চার বছরে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে’। মোদী বলেছিলেন, ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ।’ শশী পাল্টা পরিসংখ্যান দিয়েছেন কর্মহীনতা এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্যেরা। বলেছেন, ‘বড়লোক আরও বড়লোক হচ্ছে। গরিব আরও গরিব।‘
২০০৯ সালে চেন্নাইয়ে প্রবাসী ভারতীয় দিবসে কংগ্রেসি এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আমন্ত্রণে মোদীর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজন সেরেছিলেনশশী। সেটাই ছিল দু’জনের প্রথম সাক্ষাৎ। শশী জানান, হাফ শার্ট, রিমলেস চশমা, ট্রিমড সাদা দাড়ির মোদীর সঙ্গে দীর্ঘ তর্ক-বিতর্ক হয়েছিল তাঁর। মতান্তর সত্ত্বেও মোদীর সক্রিয়, আধুনিক দিকটা তাঁর ভাল লেগেছিল। কিন্তু গত পাঁচ বছরে তাঁর মনে হয়েছে, মোদী যতটা দেশের উন্নয়ন করতে চেয়েছিলেন, তার চেয়ে তাঁকে অনেক বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়েছে নিজেকে নিয়ে। এটাই এক ধরনের ‘নার্সিসিজম’ বা আত্মপ্রেম। বইয়ের প্রচ্ছদে দেখা যাচ্ছে, নিজের মোম-মূর্তিকে গভীর মনোযোগে ছুঁয়ে দেখছেন মোদী। শশীর কথায়, ‘মোদীর মধ্যে নেপোলিয়নের মতো ক্ষমতালিপ্সা ছিল। বুদ্ধিও ছিল। কিন্তু সাম্প্রদায়িকতা আর আত্মপ্রেম মোদীত্বকে হিন্দুত্বের যুপকাষ্ঠে বলি দিতে বাধ্য করেছে।’
প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব তীব্র বিরোধিতা করেছেন থারুরের বইয়ের। শশী বলছেন, ‘মোদীকে বলা হয় গেমচেঞ্জার। এখন দেখা যাচ্ছে তিনি আসলে ‘নেমচেঞ্জার’। যোজনা কমিশন থেকে নীতি আয়োগ। ইলাহাবাদ থেকে প্রয়াগ রাজ। শশীর প্রশ্ন, ‘মৃতের শরীরে আতর ছড়ালে কি মৃত জীবিত হয়? আসলে মোদী যা বলেন তা তিনি করেন না’। বিজেপির মুখপাত্র সুধাংশু ত্রিবেদী বলেন, ‘শশী কংগ্রেসের সাংসদ। তিনি নিরপেক্ষ নন। তিনি গ্লাসে রাখা অর্ধেক জল দেখে মন্তব্য করছেন, পুরো গ্লাসটা দেখছেন না। শশীর বক্তব্য, ‘আমি অস্বীকার করছি না যে আমি কংগ্রেসের সাংসদ, তাই আমি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। কিন্তু আমি যুক্তিবাদী মন নিয়ে বিষয়টি বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি’।