কোজাগরী পূর্ণিমার দিনই অমাবস্যার অন্ধকার নেমে এল মছলন্দপুরের নতুনপল্লিতে। মা লক্ষ্মীর বদলে গেরস্থ ঘরে এল লাশ।
বিজয়া দশমীর পরদিন সকলে হাসিমুখেই রওনা দিয়েছিলেন সিকিমের উদ্দেশে। কথা ছিল আগামীকাল, শুক্রবার সকলেই যে যাঁর বাড়িতে ফিরবেন। কিন্তু, তার একদিন আগেই একসঙ্গে পাঁচজন ফিরলেন কফিনবন্দি হয়ে।
বুধবার বিকালে হাবড়ার মছলন্দপুরের নতুনপল্লিতে একই পাড়ায় একসঙ্গে ঢুকল চারজনের কফিনবন্দি দেহ। বারাসতের নবপল্লি ছোটবাজারে পৌঁছাল অপরজনের। মৃতদেহ এলাকায় পৌঁছাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সকলেই। ঘটনার আকস্মিকতায় মছলন্দপুরের গোটা নতুনপল্লি শোকস্তব্ধ। শোকের জেরে অনেক বাড়িতে বন্ধ হল লক্ষ্মীপুজোও।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সন্ধ্যায় পশ্চিম সিকিমের নয়াবাজার থানার ঋষি লাগোয়া তিনজারবং-এ সিকিম বেড়াতে আসা পর্যটকদের একটি গাড়ি প্রায় দেড়শো ফুট গভীর খাদে পড়ে যায়। মারা যান, হাবড়ার মছলন্দপুরের নতুনপল্লির ডাঃ বিভাস পাঠক(৪০), তাঁর বাবা ব্রজেন্দ্রনাথ পাঠক(৭০), মা আশালতা পাঠক(৬২), জ্যাঠতুতো দিদি লিলি পাঠক(৫০) এবং বিভাসবাবুর মামা নীহারেন্দু বিশ্বাস(৪৫) মিলিয়ে মোট পাঁচজন। আহত হয়েছেন তুষারকান্তি পাঠক (৫৪), প্রতাপ বিশ্বাস এবং গাড়ির চালক অসীম রাই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আহতদের শিলিগুড়ি হাসপাতালে আনা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২১ অক্টোবর মোট ১৬ জনের টিম সিকিমেরর কালুকে বেড়াতে গিয়েছিলেন। বিভাসবাবুর স্ত্রী ও দুই মেয়ে সহ অন্যরা অন্য একটি গাড়িতে ছিলেন। লিলিদেবীর জখম স্বামী তুষারবাবুও এদিন অ্যাম্বুলেন্সে করে নতুনপল্লিতে ফেরেন। গতকাল সকালে বিভাসবাবুদের বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
বুধবার চারিদিকে যখন লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন, তখন মছলন্দপুরের নতুনপল্লি চারজনের মৃত্যুশোকে আচ্ছন্ন। এই অবস্থায় অনেকের বাড়িতেই এবার লক্ষ্মীপুজো হয়নি। মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বাড়ির আলো নিভিয়ে, নীরবতা পালন করেন প্রতিবেশীরা।