সারা দেশে সরকারি হাসপাতালের শয্যাসংখ্যার নিরিখে মমতার বাংলা এক নম্বরে। এমন রিপোর্ট দিল খোদ মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত রিপোর্ট ‘ন্যাশনাল হেলথ প্রোফাইল ২০১৮’-এ প্রকাশিত সারা দেশে সরকারি হাসপাতালের নিরিখে রোগীদের জন্য সবচেয়ে বেশী শয্যাসংখ্যা আছে বাংলার সরকারি হাসপাতালে।
কী বলছে ন্যাশনাল হেলথ প্রোফাইলের রিপোর্ট? গ্রামাঞ্চল এবং শহরাঞ্চলের সরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে বাংলার সরকারি হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা ৭৮৫৬৬। দেশে সবচেয়ে বেশি। এমনকী একাধিক স্বাস্থ্য সূচকে এগিয়ে থাকা কর্ণাটক, তামিলনাড়ুর মতো দক্ষিণী রাজ্যগুলিকেও এই বিষয়ে হেলায় হারিয়েছে বাংলা। মোট সরকারি হাসপাতালের শয্যাসংখ্যার বিচারে বাংলার পরে তামিলনাড়ু। সেখানকার সরকারি হাসপাতালের মোট শয্যাসংখ্যা ৭৭৫৩২। তিন নম্বরে উত্তরপ্রদেশ। মোট সরকারি শয্যাসংখ্যা সেখানে ৭৬২৫০। চার নম্বরে রয়েছে কর্ণাটক। ন্যাশনাল হেলথ প্রোফাইল অনুযায়ী, গ্রাম-শহর মেলালে মোট শয্যার সংখ্যা সেখানে ৬৯৮৬৫। পাঁচ নম্বরে রয়েছে মহারাষ্ট্র। মোট সরকারি শয্যাসংখ্যা সেখানে তুলনার প্রথম চার রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই কম ৫১৪৪৬।
যদিও রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের পরিসংখ্যান সংক্রান্ত বাৎসরিক রিপোর্ট ‘হেলথ অন দ্য মার্চ ২০১৬’ (সর্বশেষ প্রকাশিত) অনুযায়ী, রাজ্যের সরকারি শয্যাসংখ্যা কেন্দ্রীয় রিপোর্টের থেকে কিছুটা বেশিই। মেডিক্যাল কলেজ থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত রাজ্যের প্রত্যন্ত প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বেডযুক্ত সরকারি পরিষেবায় মোট শয্যাসংখ্যা ৮৩৮৫৯, জানাচ্ছে তারা।
এই প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। আমরা গত ক’বছরে ৪২টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল করেছি। শুধু সেই বাবদই কয়েক হাজার শয্যা বেড়েছে। এই রিপোর্ট প্রত্যাশিতই ছিল’। তারপরেও কেন সরকারি হাসপাতালে ঠাঁই পেতে কালঘাম ছোটে? অজয়বাবুর বক্তব্য, তার কারণ, রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ সরকারি পরিষেবার উপর ভরসা রাখেন। পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি জানাচ্ছেন, শুধু গত বছরই অর্থাৎ ২০১৭ সালে সরকারি হাসপাতালে আউটডোরে ডাক্তার দেখিয়েছেন ১২ কোটি মানুষ। আয়ূশের হাসপাতালগুলি ধরলে আরও ৩৮ লক্ষ। ২০১৫ থেকে ২০১৮ – এই তিন বছরে ৪২টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে বাংলায়। তার পরিষেবা নিয়ে নানা মহলে বিতর্ক থাকলেও এগুলি যে উত্তরোত্তর বাড়তে থাকা শয্যার চাহিদা অনেকাংশেই পূরণ করেছে সেই বিষয়ে সন্দেহ নেই। ৪২টির মধ্যে ৩৬টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ৩০০। আর ছ’টি সুপার স্পেশালিটির শয্যাসংখ্যা ৫০০ করে। সেই হিসেবে শুধু মুখ্যমন্ত্রীর এই স্বপ্নের প্রকল্প রূপায়ণের মাধ্যমেই সরকারি শয্যা বেড়েছে ১০ হাজার ৩৮০টি।