এক সময়ে বিভিন্ন মন্দিরের আদলে মণ্ডপই ছিল দুর্গাপুজোর মূল আকর্ষণ। কিন্তু থিমের বাজারে সেই চল বদলে গিয়েছিল কবেই। একঘেয়ে থিমের ভিড়ে স্বাদ বদলাতে আসছে ‘পুরনো মন্দির’। তাই শহর কলকাতাতেই এবার দেখা যাবে অক্ষরধাম মন্দির, রূপোর রথ, এমনকি পুরনো কলকাতাকেও।
কেরালার মন্দিরকে এবার তুলে এনেছে গল্ফ গ্রিন শারদোৎসব কমিটি। সে ভাবে থিম না হলেও পুজোকর্তা এবং স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলছেন, ‘আমরা কেরালার পাশে আছি, এটা বোঝাতেই ওই মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে।‘ শুধু আদলই নয়, মন্দিরের গায়ে থাকা হাতি, মানুষের ম্যুরালও মণ্ডপের গায়ে ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পী বঙ্কু রায়। তবে প্রতিমার ক্ষেত্রে অবশ্য থিম প্রাধান্য পায়নি। স্থানীয় বাসিন্দা দীপ সাহা সাবেক ধাঁচেরই মূর্তি গড়েছেন।
জনসমাগমের দিক থেকে কলকাতার অন্যতম দুই বড় পুজো কলেজ স্কোয়ার এবং সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারও এবার মন্দিরের আদলে তাদের মণ্ডপ তৈরি করেছে। কলেজ স্কোয়ারে ফুটে উঠেছে গুজরাতের অক্ষরধাম মন্দির। বহু বছর আগে দিলওয়ারা মন্দির গড়ে তাক লাগিয়েছিলেন শিল্পী দীপক ঘোষ। এবার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে রূপোর রথ গড়েছেন তিনি। বলছেন, ‘বঙ্গ ও কলিঙ্গের শিল্পশৈলীর মিশেল রয়েছে এই মণ্ডপে। ভিতরে রয়েছে অসাধারণ কারুকাজ’।
পুরনো কলকাতা ফুটে উঠছে এবার উত্তর কলকাতায়। হাতিবাগানের শিকদারবাগানে পুরনো দিনের কলকাতাকে তুলে ধরা হয়েছে। ওই গলির পুরনো বাড়িগুলিকেও মণ্ডপের অংশীদার করে তুলেছেন শিল্পী রবীন রায়। থিমের মতো প্রতিমাও ফিরেছে সাবেক রূপে। বাগমারির ১৪ পল্লিতেও এ বার কলকাতার ‘নস্ট্যালজিয়া’। মণ্ডপ সাজাতে সেখানে আস্ত ট্রাম এনেছেন উদ্যোক্তারা। পুরনো জমিদার বাড়ি উঠে এসেছে আহিরীটোলা সার্বজনীনের মণ্ডপেও। যাতায়াতের পথে অবিকল বা়ড়ির মতো মণ্ডপ দেখে থমকে দাঁড়াচ্ছেন অনেকেই। সব মিলিয়ে চতুর্থীতেই জমে গেছে শারদোৎসব।