‘কেন্দ্র সরকার প্রতি পদে বঞ্চনা করেছে। তারপরেও কৃষকদের ফসলের দাম পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলার মতো সাফল্য কোনও রাজ্য পায়নি’। বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমনই দাবি করেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
খাদ্যের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার কীভাবে পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চনা করছে, তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার। তিনি বলেন, দেশের মধ্যে ধান উৎপাদনে দীর্ঘদিন ধরে প্রথম পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু এ রাজ্যে উৎপাদিত ধান সামান্য পরিমাণে কেনে কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ হরিয়ানায় অনেক কম ধান উৎপাদন হলেও পুরোটাই কিনে নেয় কেন্দ্র। কয়েক বছর আগে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে কেন্দ্রীয় সরকার ১০ লক্ষ টন ধান কেনার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কিনেছিল মাত্র ৪০ হাজার টন। ধান কেনা থেকে চাল উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন খাতে অন্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গকে কম টাকা দেওয়া হয়। পাঞ্জাব প্রতি কুইন্টালের জন্য শ্রমিক খাতে পায় ১৬ টাকা। সেখানে এ রাজ্য পায় আড়াই টাকা।
বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল খাদ্য দপ্তর। বেশ কিছু গরিব পরিবারের হাতে এদিন ‘ফুড প্যাকেট’ তুলে দেওয়া হয়। জেলাগুলিতেও প্রশাসনের উদ্যোগে গরিব পরিবারগুলিকে ফুড প্যাকেট দেওয়া হয়েছে। প্যাকেটে চাল, আটা, ডাল প্রভৃতি ছিল। এদিনের অনুষ্ঠানে কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত ও ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে উপস্থিত ছিলেন। সাধনবাবু এদিন খাদ্যমন্ত্রীকে বলেন, তাঁর পরিচিত এক বিধবা মহিলা এক বেলা খেতে পাচ্ছেন না। খাদ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানেই জানিয়ে দেন, এই ধরনের খবর পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এক্ষেত্রেও তা করা হবে। ডিজিটাল রেশন কার্ড না থাকলে তার ব্যবস্থা করে দেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, এবারের খরিফ মরশুমে প্রয়োজনে চাষিদের কাছ থেকে ৫২ লক্ষ টনের লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশি ধান কেনা হবে। ধানের অভাবী বিক্রি হতে দেওয়া হবে না। চাষিদের কাছে কোনও ধান যাতে অবিক্রিত না থাকে, তা নিশ্চিত করবে সরকার।
পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘সকলের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা হয়েছে এই রাজ্যে। বাম আমলে আমলাশোলের অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা আর হয় না রাজ্যে। একদিন গোটা দেশ খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গকে অনুসরণ করবে’। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কৃষকদের মধ্যে বিক্ষোভ থাকলেও বাংলা তা থেকে মুক্ত। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কৃতিত্ব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের’।