দলে দায়িত্ব বাড়ল পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর। এমনিতে মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও উত্তর দিনাজপুর জেলার পর্যবেক্ষক তিনি। এবার থেকে নদীয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্বও সামলাবেন পোড় খাওয়া এই তৃণমূল নেতা । রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে একা শুভেন্দুকেই ১৩টি লোকসভার দায়িত্ব দেওয়া হল। হালফিলে এত বড় দায়িত্ব আর কোনও তৃণমূল নেতা পাননি বলেই মনে করছে তথ্যভিজ্ঞ মহল। এখানেই শেষ নয়। মোদী বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে এককাট্টা করে ১৯ জানুয়ারি মমতার ডাকা বিগ্রেড সমাবেশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি প্রচার কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বও তুলে দেওয়া হল শুভেন্দুর কাঁধে। আজ, শুক্রবার দলের কোর কমিটির বৈঠকের পর সংগঠনের এই রদবদলের কথা ঘোষণা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং।
তৃণমূলের অন্দরে শুভেন্দু অধিকারীর দায়িত্ববৃদ্ধির এই ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি সরগরম। অনেকের মতে, এটা হওয়ারই ছিল। মমতা যে শুভেন্দুর ওপর ভরসা করছেন সেটা পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণার পর পরিবহনের সঙ্গে পরিবেশ দফতরের দায়িত্ব দিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অধীরের গড়ে তৃণমূলের থাবা বসানোর কৃতিত্ব। যার অন্যতম কারিগর শুভেন্দু। মুর্শিদাবাদ যে ধীরে ধীরে অধীর-গড় থেকে শুভেন্দু-গড়ে পরিণত হয়েছে পঞ্চায়েত ভোটেই সেটা স্পষ্ট হয়ে গেছে। তাই শুভেন্দুর ওপর বাড়তি ভরসা রাখছেন দলনেত্রী।
কিন্তু নদীয়া এবং ঝাড়্গ্রামের দায়িত্ব কেন? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গত পঞ্চায়েত ভোটে এই দুই জেলাতেই বিজেপি ভালো ফল করেছে। বাংলায় তাঁদের আর বাড়তে দিতে চান না মমতা। আসন্ন লোকসভা ভোটকে মাথায় রেখে এবার এখানে সংগঠন মজবুত করতে চান নেত্রী। আর এই ব্যাপারে শুভেন্দুর চেয়ে যোগ্য ব্যক্তি আর কে আছেন। সঙ্গে যোগ হয়েছে শুভেন্দুর অভিজ্ঞতা। অতীতে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলেছেন শুভেন্দু। মাওবাদী হুমকি উপেক্ষা করে সেখানে পড়ে থেকে সংগঠন সাজিয়েছিলেন তিনি। এলাকাগুলিকে চেনেন হাতের তালুর মতো। তাই বিজেপির হাত থেকে এই দুই জেলা ছিনিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব বর্তেছে বহু যুদ্ধের সেনাপতি শুভেন্দুর ওপর।