দমদমের নাগেরবাজারের যেখানে বিস্ফোরণ ঘটেছে সেই বহুতলেই তৃণমূলের দলীয় কর্যালয়। সেখানেই তৃণমূল কর্মীরা বসেন, আলাপ-আলোচনা করেন, চা খান। সপ্তাহে তিনদিন এখানেই বসেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার পাঁচু রায়। মনে করা হচ্ছে, তিনিই ছিলেন দুষ্কৃতীদের টার্গেট। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তিনি। পাঁচু রায় বলেন, ‘এটা কোনও সাধারণ গুন্ডা-বদমায়েশের কাজ নয়। এর পেছনে রাজনৈতিক মদত রয়েছে বলেই মনে হয়। এ অঞ্চলে আরএসএসের একটি ক্ষীণ স্রোত ক্রিয়াশীল। তৃণমূল এবং আমাকে ভয় দেখাতেই চক্রান্ত করে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে’। চেয়ারম্যান এবং কাউন্সিলার হওয়ার সুবাদে দমদম-নাগেরবাজার এলাকা পাঁচু চেনেন হাতের তালুর মতো। সৎ বলেই সুনাম আছে তাঁর। এলাকায় কোনও রকম বেআইনি কাজ বরদাস্ত করেন না। স্থানীয় বাসিন্দারাও বলছেন, পাঁচুবাবুকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যই চক্রান্ত করে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হতে পারে।
পাঁচু রায় এলাকায় দীর্ঘদিনের পরিচিত মুখ। সবসময়ই তিনি অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে চলেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গেও তাঁর ভাল সম্পর্ক। এলাকায় উন্নয়নের কাজ করছেন ক্রমাগত। সরকারি নীতি মেনে জলাভূমি বোজানো বন্ধ করে দিয়েছেন। স্থানীয় প্রোমোটার, ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও তাঁর কোনও বিরোধ নেই। তাহলে কারা ঘটাল এমন কাজ? পাঁচুর কথায়, ‘হতে পারে কোনও জঙ্গি সংগঠন অথবা কোনও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াশীল দলের কাজ। সবটাই তদন্ত হচ্ছে’।
কী ঘটেছিল মঙ্গলবার? পাঁচু বলেন, ‘আমি রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতি-এই তিনদিন ওই অফিসে যাই। সাড়ে ৯টা থেকে অনেকক্ষণ থাকি। ছুটির দিনে একটু বেশি সময়ই থাকি। এদিন সকালবেলায় যখন তৈরি হচ্ছি, হঠাৎ ফোন আসে। বলা হয়, গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেছে। পরে আবার বলা হয়, বোমা ফেটেছে। আমি পুলিসে যোগাযোগ করি। দমদম থানার পুলিস আসে। ঘটনাস্থলে যাই। আমি যখন দলীয় অফিসে থাকি, যে জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটেছে সেখানে তৃণমূল কর্মীরা বসেন।।আজ ওই সময় আমাদের কর্মীরা ছিলেন না। আমিও পৌঁছইনি। গোটা বিষয়টাই পুলিস দেখবে। আমরা ঠিক করেছি, রাস্তার ওপরে বা মোড়ে কোনও দোকান বসতে দেব না। অঞ্চলের বাসিন্দা ছাড়া বহিরাগত কাউকে এখানে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না। গোটা এলাকা দ্রুত সিসিটিভি দিয়ে মুড়ে ফেলা হবে’।