দল কথা রাখেনি।
শ্রেণী বৈষম্য দূর করার কথা বলে সিপিএম। অথচ তাদের দলের হোলটাইমাররাই বৈষম্যের অভিযোগে ফুঁসে উঠলেন। নেতারা বাড়ি-গাড়ি চড়ে ঘুরছেন। আর সর্বক্ষণের কর্মীদের ‘সম্মানজনক’ ভাতা দিতে হাত কাঁপছে শীর্ষ নেতৃত্বের। সর্বক্ষণের কর্মীদের দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা শিবিরে এভাবেই একাধিক বৈষম্যের ইস্যুতে আলিমুদ্দিনের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন পার্টির হোলটাইমার কর্মীরা।
বাগুইহাটিতে প্রমোদ দাশগুপ্তের নামাঙ্কিত পার্টি স্কুলে বিভিন্ন জেলার বাছাই করা ৫৭ জন সর্বক্ষণের কর্মীকে নিয়ে এই প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। শিবিরের দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই বক্তব্য পেশ করেন বিমান বসু। সেই বক্তব্য শেষ হতেই তাঁকে উদ্দেশ্য করে ধেয়ে আসে বৈষম্য নিয়ে হোলটাইমারদের প্রশ্নবাণ।
বহুদিন ধরেই শ্রমিকদের নুন্যতম বেতন সাড়ে আঠারো হাজার টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে সিপিএম। দাবি আদায়ে হয়েছে বক্তৃতা, মিছিল। অথচ দলের সর্বক্ষণের কর্মীরাই ঠিক মতো ভাতা পান না। পেলেও বিভিন্ন জায়গায় কর্মীদের ভাতা ভিন্ন। কেউ পান পাঁচ হাজার, কেউ সাড়ে পাঁচ হাজার। কিন্তু অভিযোগ, যেসব কর্মীরা নেতাদের সুনজরে আছেন, তাঁদের কপালে জুটছে দ্বিগুণ বা তিনগুণ ভাতা। প্রশ্ন, কেন এই বৈষম্য? অথচ দলীয় প্লেনামে সর্বক্ষণের কর্মীদের নির্দিষ্ট নিয়ম বা সামঞ্জস্য রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে ঘটছে ঠিক তার উল্টো? দলের তহবিলে টাকা নেই, তাও নয়। দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল সিপিএম। কিন্তু সেই দলের হোলটাইমারদেরই নির্দিষ্ট এবং সম্মানজনক ভাতা না জোটায় ক্ষুব্ধ কর্মীরা। যেটা জোটে তাতে সংসার চলে না।
একইভাবে বিভিন্ন জেলায় একশ্রেণীর সর্বক্ষণের কর্মীরা গাড়ি চেপে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কলকাতার হোলটাইমারদের বেশীরভাগেরই নিজস্ব গাড়ি আছে। এটা কীভাবে ঘটছে? এই নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। কর্মীদের অভিযোগ, সংসার চালাতে হোলটাইমারদের স্ত্রী বা পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল দল। কার্যক্ষেত্রে সে কথাও রাখেননি নেতারা।
দলের হোলটাইমারদের এমন প্রশ্নবানের সামনে পড়ে কার্যত থতমত খেয়ে যান বিমান। রুমালে মুখ মুছে আমতা-আমতা করে সাফাইয়ের সুরে বলেন, ‘এমন বৈষম্য অবশ্যই থাকার কথা নয়। খোঁজ নিয়ে দেখছি’।