মঙ্গলবার মহাত্মা গান্ধীজির জন্মদিবস উপলক্ষ্যে বেলেঘাটার গান্ধীভবনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশে চলতে থাকা সাম্প্রদায়িকতা প্রসঙ্গে, সেখানেই বিজেপিকে একহাত নিলেন তিনি। বলেন, ‘দেশে এখন সুখ-শান্তি নেই। অস্থিরতা চলছে। দেশবাসীর গভীর সংকটে। নোটবন্দীর ধাক্কা সামলে উঠতে পারেননি সাধারণ মানুষ। যাঁরা গান্ধীকে ভালবাসেন, তাঁরা মানুষকেও ভালবাসেন। ভাগাভাগির রাজনীতি করবেন না। যিনি সকলকে নিয়ে চলতে পারেন, তিনিই দেশের নেতা। গান্ধী সকলকে নিয়ে চলতে পারতেন।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, শশী পাঁজা, সুব্রত বক্সী, ইন্দ্রনীল সেন, পরেশ পাল প্রমুখ। সকলের সামনে গান্ধীজির সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেন মমতা। তাঁর কথায়, গান্ধীজি আজীবন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাণী প্রচার করেছিলেন। তখন আর এখনকার রাজনীতি আলাদা। তখন ছিল পরাধীন আমল। আজ স্বাধীন হয়েও আমরা পরাধীন হয়ে রয়েছি। দেশে অঘোষিত ফ্যাসিজম চলছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, দেশ যেদিন স্বাধীন হয়, সেদিন গান্ধীজি কোথায় ছিলেন অনেকেই তা জানেন না। তিনি সেদিন ছিলেন বেলেঘাটার গান্ধী ভবনেই, যাতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা না সৃষ্টি হয়।
গতকাল, বেলেঘাটার গান্ধী ভবন সংস্কারের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে সাড়ে ৩ কোটি টাকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন মমতা। তিনি জানান, ‘গান্ধী ভবনে মিউজিয়াম ও লাইব্রেরি হবে। এই ভবনটি সরকার অধিগ্রহণ করেছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গান্ধীজির নামে একটি চেয়ার থাকবে। উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে তাঁর নামে মেধাবী ভাতাও চালু করা হবে।’ প্রসঙ্গত, গতকালের অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকেই তিনি তমলুকে মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করেন। মমতা এদিন আরও বলেন যে, ‘দেশের একতা রক্ষা করবই। দেশকে বিক্রি করতে দেব না। স্বাধীনতা, সভ্যতা ও মানবিকতা আগামী দিনে একইসঙ্গে চলবে। এই বাংলার মাটি, বীরের মাটি, জয়ের মাটি। এখানে চমকে-ধমকে লাভ হবে না। বাংলা সহনশীলতা জানে। বাংলার মানুষ সহিষ্ণু।’ এরপর মঞ্চ থেকেই তিনি স্লোগান দেন- ‘বাংলার মাটি দিচ্ছে ডাক, সাম্প্রদায়িকতা নিপাত যাক’। তাঁর সঙ্গে গলা মেলান সভায় উপস্থিত সকল জনতা।