নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে নয়। গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় সামনে থেকে অ্যাপেল কর্তাকে গুলি করেছিল পুলিশ। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। ফলে গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে পালানোর সময় অ্যাপলের সেলস ম্যানেজারকে গুলি করা হয় বলে পুলিস যে বিবৃতি দিয়েছিল, তা খারিজ হয়ে গেল। বিবেকের এই ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সামনে আসতেই বিড়ম্বনা বাড়ল যোগী সরকারের।
ময়নাতদন্ত রিপোর্টে জানা গেছে, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ অর্থাৎ খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে বিবেককে। ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে তাঁর মুখের বাঁদিকের অংশ। তারপর সেই বুলেট মুখমণ্ডলের ওপরের অংশ থেকে নীচের দিকে চলে গেছে। অর্থাৎ, অভিযুক্ত কনস্টেবল কোনও উঁচু জায়গা থেকে বিবেককে গুলি করেছিলেন। এখানেই আরও একটি প্রশ্ন উঠছে। যেহেতু বিবেক এসইউভি চালাচ্ছিলেন এবং সেটি অন্যান্য গাড়ির তুলনায় অনেকটাই উঁচু, তাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে এমন উঁচু থেকে গুলি করা কী করে সম্ভব?
পাশাপাশি, উত্তরপ্রদেশ পুলিসের এহেন অপরাধের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে শীর্ষকর্তাদের বিরুদ্ধে। সেকথা স্বীকার করে নিয়ে রাজ্যের আইনমন্ত্রী ব্রিজেশ পাঠক বলেন, ‘বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। এই নিয়ে আমি বিবেকের পরিবারের সঙ্গে একমত। কয়েকজন আধিকারিক মামলাটিকে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেন। ভুল পদ্ধতিতে নেওয়া হয়েছিল প্রথম এফআইআর। পুলিশের বিরুদ্ধেও তদন্ত হবে।’
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে দেখা করেন বিবেকের স্ত্রী কল্পনা। তিনই বলেন, ‘একটা চাকরি, মেয়েদের শিক্ষা, শাশুড়ির ব্যয়বহনের পাশাপাশি অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি চেয়েছি’। এরপরেই উপমুখ্যমন্ত্রী দীনেশ শর্মা জানান, ‘কল্পনাকে চাকরি, ২৫ লক্ষ টাকা, দুই মেয়ের নামে ৫ লক্ষ টাকা করে দু’টি ফিক্সড ডিপোজিট এবং শাশুড়ির নামে ৫ লক্ষ টাকার আরও একটি এফডি অনুমোদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।’ বিএসপি নেত্রী মায়াবতীও বিবেকের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, শনিবার ভোররাতে তীব্র গতিতে এসইউভি চালিয়ে যাচ্ছিলেন অ্যাপলের এগজিকিউটিভ বিবেক কুমার (৩৮)। সঙ্গী ছিলেন মহিলা সহকর্মী সানা খান। অভিযোগ, গোমতীনগরে টহলরত দুই কনস্টেবল তাঁকে গাড়ি থামতে বললে তাঁদের মোটরবাইকে ধাক্কা মারেন বিবেক। তারপরেই বিবেককে লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে উইন্ডস্ক্রিনে গুলি করেন কনস্টেবল প্রশান্ত চৌধুরী। গালে বুলেটবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বিবেককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।