বাংলা বনধ সফল করাতে এবার শিশুদের ব্যবহার করার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। মাথায় কুবুদ্ধি ঢুকিয়ে, বুকে কালো ব্যাজ পরিয়ে, হাতে প্ল্যাকার্ড ধরিয়ে দেওয়া হল শিশু-কিশোরদের। এভাবেই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে আট থেকে ষোলো বছরের কমপক্ষে ৩০ জন শিশুকে নামিয়ে দেওয়া হল বনধ সফল করাতে। এমনকি ওই নাবালকদের হাতে লাঠিসোঁটাও দেখা গেছে। এমন ঘৃণ্য দৃশ্যের সাক্ষী থাকল উত্তর দিনাজপুরের পাটমনি গ্রাম। নাবালকদের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে আজকের বনধ সফল করুন’।
ওই শিশুদলের একজনের কথায়, ‘আমরা শুনেছি দুজন ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। এর বেশি কিছু জানি না। বড়রা আমাদের এখানে আসতে বলেছে। তাই এসেছি। দেখছেন না আমরা কালো ব্যাজ পড়ে আছি। ’নিজের বুকের দিকে আঙুলের ইশারা করে দেখাল ওই শিশু। কী করে মারা গেছে জান? কারা মেরেছে? এমন প্রশ্নে এ-ওর মুখ চাওয়া-চাওয়ি করল শিশুরা। তারপর অপেক্ষাকৃত মাথায় লম্বা একজনের দিকে আঙুল দেখিয়ে বলল, ‘ও সব জানে’। বোঝাই যাচ্ছে, বনধ সমর্থকদের রাজনীতি কতটা নীচে নেমেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলায় জমি পেতে মরিয়া বিজেপি-র এখন আর মাথার ঠিক নেই। তাই শিশুদেরকেও এভাবে নোংরা রাজনীতির খেলায় টেনে নামাচ্ছে।
কারা এমন ভাবে শিশুদের নিয়ে রাজনীতিতে মেতেছেন? শিশুদের অভিভাবকরা কারোর নাম না করলেও, তাঁরা যে স্থানীয় বিজেপি নেতাদের অঙ্গুলিহেলনেই চলছেন সেটা স্পষ্ট জানিয়েছেন। যে বনধ সমর্থক এই শিশুদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তিনি অবশ্য এর মধ্যে দোষের কিছু খুঁজে পেলেন না। উল্টে প্রশ্ন করলেন, ‘দুজন স্কুল ছাত্রের মৃত্যুতে যদি বাচ্চারা প্রতিবাদ করে, তাহলে দোষের কি আছে?’
বনধের দিন ইসলামপুরে তিনটি সরকারি বাস ভাঙচুর করা হয়। আগুন লাগানো হয় একটি বাসে। সমস্ত অভিযোগের তীর বিজেপির দিকে। পুলিশের দিকে পাথর ছুঁড়তেও দেখা গেছে তাদের। এমনকি পরিবহন মন্ত্রীর গাড়িতেও হামলা চালায় বনধ সমর্থকেরা।
সেসবে অবশ্য পাত্তা দেন নি শুভেন্দু। বনধ উপেক্ষা করেই ইসলামপুর বাসস্ট্যান্ডে প্রতিবাদ সভায় অংশ নেন। শুভেন্দু জানিয়েছেন, ‘আমরা নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের পাশে আছি। ঘটনার দিন বিজেপির লোকজন বিহার থেকে দুষ্কৃতী ভাড়া করে এনেছিলো। তারা গামছায় মুখ বেঁধে স্কুলে ঢুকে হামলা চালায়। তাদের গুলিতেই ওই দুই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ আদৌ গুলি চালায়নি।’