গতকাল, বুধবার সন্ধ্যায় বিজেপি-র ডাকা বনধ ব্যর্থ হতেই পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ির খাজরা বাজারে তাণ্ডব চালালো একদল দুষ্কৃতী। চলল এলোপাথাড়ি গুলি। আর তাতেই মৃত্যু হল এক স্থানীয় ব্যবসায়ীর। নিহত ব্যবসায়ীর নাম বিভুরঞ্জন দাস (৫০)।
১২ ঘন্টার বনধ শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ওই বাজারে একটি স্করপিও গাড়িতে চড়ে এসে দুষ্কৃতীরা আচমকা গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় বলে স্থানীয় দোকানদাররা পুলিশকে জানিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধকে উপেক্ষা করে দোকান খুলেছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী তথা তৃণমূল কর্মী বিভুরঞ্জন দাস। বনধ ব্যর্থ হতেই খাজরা বাজারে চড়াও হয় ওই দুষ্কৃতীদল। তারা এসেই গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওই ব্যবসায়ী। সঙ্গে সঙ্গে ওঁকে কেউ উদ্ধারও করতে যেতে পারেনি। কারণ টানা আধঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে ওই দুষ্কৃতীরা। এরপর প্রথমে তাঁকে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতাল এবং পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ঘটনাটি দুষ্কৃতীদের কাজ বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনাটি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’ নিহত বিভুরঞ্জন দাস তৃণমূলের দলীয় কর্মী ছিলেন বলে জানান তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। তৃণমূল সভাপতির বক্তব্য, ‘বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়ে দিলীপ ঘোষরা খড়গপুর থেকে গুণ্ডা আনিয়ে আমাদের কর্মীকে খুন করল। এই রাজনীতি বাংলায় চলতে দেওয়া হবে না।’ প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় যুবক অভিজিৎ পাতর বলেন, ‘গুলি চালিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।’ বিভুরঞ্জনের দুই মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রী আছেন। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলে বেঙ্গালুরুতে থাকেন। ঘটনার সময় বাড়িতে স্ত্রী সীমা দাস ছিলেন। তিনি কিছুই বুঝতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘কে বা কারা কেন মারল, কিছুই জানি না।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী তথা তৃণমূল কর্মী খুনের নিন্দা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃতের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। মমতা বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস ওই পরিবারের পাশে রয়েছে। এদিকে, জেলা তৃণমূল এই খুনের প্রতিবাদে আজ, বৃহস্পতিবার জেলার প্রতিটি ব্লকে বিক্ষোভ দেখাবে।