‘রাম’ ভক্ত মোদীর ‘গোয়বেল’ ভক্ত শাহ! জোসেফ গোয়েবেলের মতে, কোনও মিথ্যেকেও বারংবার সত্যি বলে প্রচার করা হলে, আখেরে সেটা জনমানসে সত্যি হয়েই জাঁকিয়ে বসে। তখন মিথ্যেটাকেই মানুষ সত্যি বলে ধরে নেয়। এবার সেই পথই অনুসরণ করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
খবরে সত্যতা নাই থাকুক, প্রতিটা ভুয়ো খবরকেও আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেব এবং মানুষ সেটাকেই সত্যি বলে গ্রহণ করবে। রাজস্থানের কোটা-য় দলের সোশ্যাল মিডিয়ার ভল্যান্টিয়াদের উদ্দেশ্যে এমন কথাই বলতে শোনা গেল অমিত শাহকে। সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে দলের দলের সোশ্যাল মিডিয়ার কর্মসূচী নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শাহ বলেন, “উত্তরপ্রদেশে এক বছর আগে নির্বাচন ছিল। নির্বাচনের সময়ে বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়ার কর্মীরা হোয়াটস অ্যাপে দুটো বড় বড় গ্রুপ বানিয়েছিলেন। তার মধ্যে একটিতে ছিল ১৫ লক্ষ মানুষ এবং অন্যটিতে ১৭ লক্ষ। অর্থ্যাৎ মোট ৩২ লক্ষ মানুষ। রোজই সকাল ৮টায় সেই কর্মীরা সকলকে ‘সত্য জানুন’ লিখে বার্তা পাঠিয়ে দিতেন। কোনও খবরের কাগজ বিজেপিকে বিপাকে ফেলতে ‘মিথ্যে’ খবর ছাপলেই, হোয়াটস অ্যাপে তড়িঘড়ি সেই খবরের কপিটি এবং একইসঙ্গে ‘সত্যি’টা হোয়াটস অ্যাপে সকলকে জানিয়ে দেওয়া হত। ফলে হোয়াটস অ্যাপে তা ভাইরাল হয়ে যেত। আর যেই খবরের কাগজ ‘মিথ্যে’ খবর ছেপেছে, সেখানে সোশ্যাল মিডিয়া এবং দলের অনুগামীরা ঝাঁপিয়ে পড়ত। এভাবেই ‘চাপ’-এ পড়ে সমস্ত খবরের কাগজগুলি ‘নিরপেক্ষ’ হতে বাধ্য হয়েছে।” তিনি আরও বলেন যে, রাজস্থানেও দলের সোশ্যাল মিডিয়ার ভল্যান্টিয়াররা এ কাজে তেমনই দক্ষ।
সামনেই রাজস্থানের বিধানসভা নির্বাচন। আর তারপরেই দেশে লোকসভা নির্বাচন। শাহ যে আবারও তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার ‘যোদ্ধা’দের চাঙ্গা করতেই এদিনের ভাষণে উত্তরপ্রদেশের কথা টেনে আনলেন তা বলাই বাহুল্য। যেভাবে উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে, খবরের কাগজের খবরগুলিকে ‘মিথ্যে’ প্রমাণ করে, ‘সত্যি’ খবরগুলি ভাইরাল করা হয়েছিল, লোকসভা ভোটেও ঠিক সেই পন্থাই নিতে চলেছে বিজেপি। শাহ-এর ভাষণে তা স্পষ্ট। তাঁর মতে যে সংবাদ মাধ্যম বা খবরের কাগজগুলি বর্তমানে ‘নিরপেক্ষ’, তাদের যে আদতে এবার বিজেপির হয়েই প্রচার করতে দেখা যাবে তাও আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখেনা।