সিপিএমের গর্ব অভিযুক্ত জাকির ভল্লুককে জেরা করে আমডাঙার গোপন ডেরা থেকে প্রচুর বোমা, গুলি বাজেয়াপ্ত করল পুলিশ। নিজের নিরাপত্তার জন্যই এই অস্ত্রভাণ্ডার মজুত করেছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে সে। এই ব্যাপক অস্ত্রশস্ত্র দেখে প্রশাসনের চোখ কপালে। পুলিশের সন্দেহ, আমডাঙার অনেক জায়গাতেই জাকির এখনও অস্ত্র ও বোমা লুকিয়ে রেখেছে। তাই তাকে আরও জেরা করা হবে। জাকিরের দেখানো ঘরের ভেতর থেকে ২০০টি তাজা বোমা, তিনটি পিস্তল এবং ১০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। গণ্ডগোলের দিন থেকে এই নিয়ে বইষগাছি গ্রাম থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রায় সাড়ে তিন হাজার বোমা উদ্ধার করা হল।
আমডাঙার তারাবেড়িয়া, বোদাই ও মরিচা-এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে কেউ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলাফল হয়েছিল ত্রিশঙ্কু। গত ২৯ আগস্ট এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের দিন ছিল। অভিযোগ, বোর্ড গঠনের আগের রাত থেকেই এলাকায় তাণ্ডব শুরু করে সিপিএম কর্মীরা। নৃশংসভাবে খুন হন ৩ তৃণমূল কর্মী। এই হামলার মূল অভিযুক্ত ছিল বহিষগাছি গ্রামের সিপিএম নেতা জাকির ভল্লুক। সে এবার সিপিএমের টিকিটেই আমডাঙা পঞ্চায়েত সমিতি থেকে জয়ী হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, গণ্ডগোলের পরই আমডাঙা থেকে রাজস্থান পালিয়ে গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিল জাকির। গত ১৫ সেপ্টেম্বর বারাসত জেলা পুলিশের টিম সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে।
পুলিশ জানিয়েছে, গণ্ডগোলের দিন আমডাঙায় বিভিন্ন ধরনের বন্দুক ছাড়াও পেটো বোমা, কৌটো বোমা, সকেট বোমা, পিন বোমা-সহ হ্যান্ড গ্রেনেডের মতো দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি মারাত্মক শক্তিশালী বোমাও ব্যবহার হয়েছিল। আমডাঙায় ওই বোমা ও অস্ত্র মজুতের পিছনে ধৃত জাকির ভল্লুকের সরাসরি হাত রয়েছে বলে দাবি পুলিশের। জাকির প্রথমে স্বীকার না করলেও, পরে পুলিশকে বহিষগাছি এলাকায় নিজের গোপন ডেরার কথা জানায়। এরপর জাকিরকে সঙ্গে নিয়েই ওই ডেরায় তল্লাশি অভিযান চালায় জাকিরই রাস্তা চিনিয়ে পুলিসকে নিজের গোপন ডেরাতে নিয়ে যায়। সেখানে পৃথক পৃথক প্যাকেটে মুড়ে ওই অস্ত্র ও বোমার ড্রাম রাখা ছিল। মঙ্গলবার জাকিরকে বারাসত জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।