বিজেপির ডাকা বাংলা বনধকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ স্থানীয় এলাকা। সকাল থেকেই রাস্তায় নেমেছেন বনধের সমর্থক বিজেপি কর্মীরা৷ একাধিক স্থানে বিজেপি কর্মী এবং বনধ সমর্থকদের দ্বারা বাস ভাঙচুর ও বাসে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে বাসে ভাঙচুর করা হয় ও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়৷ কড়া নিরাপত্তায় ঘিরে রাখা হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা৷ চলছে পুলিশের টহলদারি৷ এরই মধ্যে ইসলামপুরে এসে বিজেপির উদ্দেশ্যে কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানালেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘দু’-চারজন মুখে গামছা বেঁধে হামলা চালিয়েছে। কিষেণজিও মুখে গামছা বেঁধে হামলা চালিয়েছিল। তার কী হাল হয়েছে সবাই জানে। ভয় দেখিয়ে তৃণমূলকে আটকানো যাবে না’।
ইসলামপুরের দাঁড়িভিট হাইস্কুলে উর্দু শিক্ষক নিয়োগকে ঘিরে গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকেই রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর৷ মৃত্যু হয় স্কুলের দুই প্রাক্তন ছাত্রের। অভিযোগের তীর ধেয়ে যায় পুলিশের দিকে। তবে জেলা পুলিশের তরফে স্পষ্ট বিবৃতি জারি করে জানান হয় যে, তাদের পক্ষ থেকে গুলি চালানো হয়নি৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আজ, বুধবার ১২ ঘন্টার বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে রাজ্য বিজেপি৷ কিন্তু রাজ্যের মানুষ সেই ডাকে সাড়া না দেওয়ায়, আর পাঁচটা দিনের মতই সচল ছিল রাজ্য। তবে সকাল থেকেই বাস ভাঙচুর ও বাসে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইসলামপুর। এমনকি পুলিশের গাড়িতেও ঢিল ছোঁড়া হয় বলে খবর। নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামপুরে না কি পুলিশ বন্দুকে সাইলেন্সার লাগিয়ে গুলি চালিয়েছে। নন্দীগ্রামে পুলিশ অনেক গুলি চালিয়েছে। আমি সেখানে ছিলাম। কিন্তু কখনো শুনিনি পুলিশ বন্দুকে সাইলেন্সার লাগিয়ে গুলি চালায়’। তিনি আরও বলেন যে, ‘দাঁড়িভিট কাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে। তাপস-রাজেশের খুনিরা শাস্তি পাবেই। আমরা তাঁদের পরিবারের পাশে আছি। তাঁদের মৃত্যু নিয়ে ঘৃণ্য রাজনীতি করছে ধ্বংসাত্মক পার্টি’।
এ দিন বিজেপির ডাকা বনধ প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘মানুষ বনধে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সাড়া দেননি। বনধ ব্যর্থ করেছেন রাজ্যবাসী। এই কারণেই বনধ সফল করতে বাসে আগুন লাগিয়েছে বিজেপি। সব ঘটনারই ভিডিও ফুটেজ আমার কাছে আছে। সে ফুটেজ দেখেই দোষীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেব। এর পর হিংসাত্মক কাজে জড়িত কেউ জেলের বাইরে থাকবে না’। এর পাশাপাশি বিজেপির উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জের সুরে তিনি বলেন, ‘জঙ্গলমহল, মুর্শিদাবাদ ফাঁকা করেছি। ইসলামপুরে আজ এসেছি। এ বার থেকে দু’-চারদিন পর পর এখানে আসব’। মন্ত্রীর এই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে বিজেপির তরফ থেকে কী প্রতিক্রিয়া আসে, সেটাই দেখার। ইতিমধ্যেই বনধ তুলে নিয়েছে তারা। তবে আগামী কয়েকদিনও যে রাজ্য রাজনীতির নজর থাকবে ইসলামপুরের দিকে, তা বলাই বাহুল্য।